নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা বিষয়ে ফেসবুক লাইভে এসে গুজব ছড়ানোর অভিযোগে গ্রেফতার অভিনেত্রী কাজী নওশাবা ঘটনার সময় আশেপাশেই ছিলেন না। জিগাতলায় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে একজনের চোখ তুলে ফেলা হয়েছে ও চার জনকে খুন করা হয়েছে বলে দাবি করেন নওশাবা। কিন্তু ওই সময় তিনি উত্তরায় নাটকের একটি শ্যুটিং স্পটে ছিলেন। কিন্তু ফেসবুক লাইভে এমন অভিনয় করেন যাতে মনে হয় তিনি ঘটনাস্থলের আশেপাশেই ছিলেন। শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলা হয়।
শনিবার বিকালে ফেসবুক লাইভে কাজী নওশাবা দাবি করেন, রাজধানীর জিগাতলায় একজন শিক্ষার্থীর চোখ তুলে ফেলা ও চার শিক্ষার্থীকে মেরে ফেলা হয়েছে। তবে খোঁজ নিয়ে তার এসব তথ্যের কোনও সত্যতা পাওয়া যায়নি। এ কারণে বিতর্ক সৃষ্টি হয়। ফেসবুক লাইভে নওশাবা বলেন, ‘জিগাতলায় আমাদের ছোট ভাইদের (শিক্ষার্থী ইঙ্গিত করে) একজনের চোখ তুলে ফেলা ও চারজনকে মেরে ফেলা হয়েছে। একটু আগে ওদেরকে অ্যাটাক করা হয়েছে। ছাত্রলীগের ছেলেরা সেটা করেছে। প্লিজ-প্লিজ ওদেরকে বাঁচান। তারা জিগাতলায় আছে। আপনারা এখনই রাস্তায় নামবেন ও আপনাদের বাচ্চাদের নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যাবেন, এটা আমার রিকোয়েস্ট। বাচ্চাগুলো নিরাপত্তাহীনতায় আছে। আপনারা প্লিজ কিছু একটা করেন। আপনারা সবাই একসাথে হোন। আমি এ দেশের মানুষ, এ দেশের নাগরিক হিসেবে আপনাদের কাছে রিকোয়েস্ট করছি।’
সংবাদ সম্মেলনের র্যাবের মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান বলেন, ফেসবুকের গুজবের ঘটনাস্থল ছিল জিগাতলায়, সেই সময় কাজী নওশাবা ছিলেন উত্তরা নাটকের একটি শ্যুটিং স্পটে। সেখান থেকেই তিনি ফেসবুকে লাইভ করে গুজবটি ছড়িয়ে দেন। আর দ্রুত সময়ের মধ্যে তা ভাইরাল হয়ে যায়। গুজবটি ফেসবুকের ছড়িয়ে যাওয়ার পরই তা আমাদের নজরে আসে। আমরা বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু করি। আমরা নিশ্চিত হতে পারি যে, কাজী নওশাবার ফেসবুক আইডি থেকেই গুজবটি ছড়ানো হয়েছে। পরে রাত ১০টার দিকে উত্তরা থেকে তাকে আটক করে র্যাব-১ এর সদর দফতের নিয়ে আসা হয়।
মুফতি মাহমুদ খান আরও বলেন, আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গুজব ছড়ানোর বিষয়টি তিনি স্বীকার করেছেন। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি এটাও জানিয়েছেন যে, ওই সময় তিনি ঘটনাস্থলে ছিলেন। রুদ্র নামে একজনের কাছ থেকে তথ্যটা পেয়েছেন।
র্যাবের মিডিয়া পরিচালক বলেন, রুদ্র সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয়ে নওশাবা দাবি করেছেন গত ৩ তারিখে (শুক্রবার) শাহবাগে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সময় রুদ্রর সঙ্গে তার পরিচয় হয়। সে রাজধানীর একটি স্কুলে পড়ে। ওই দিন শাহবাগে শিক্ষার্থীদের মধ্যে পানি ও খাবার বিতরণের সময় বারবার দেখা হওয়ায় তাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়। তখন থেকেই রুদ্রর সঙ্গে নওশাবার যোগাযোগ রয়েছে। তিনি রুদ্রর কাছ থেকেই আন্দোলনের ব্যাপারে বিভিন্ন খোঁজখবর নিতেন। আর শনিবারের গুজবের তথ্যগুলো রুদ্রই তাকে জানিয়েছে বলে দাবি করেছেন নওশাবা।
র্যাবের মিডিয়া পরিচালক বলেন, রুদ্র সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয়ে নওশাবা দাবি করেছেন গত ৩ তারিখে (শুক্রবার) শাহবাগে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সময় রুদ্রর সঙ্গে তার পরিচয় হয়। সে রাজধানীর একটি স্কুলে পড়ে। ওই দিন শাহবাগে শিক্ষার্থীদের মধ্যে পানি ও খাবার বিতরণের সময় বারবার দেখা হওয়ায় তাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়। তখন থেকেই রুদ্রর সঙ্গে নওশাবার যোগাযোগ রয়েছে। তিনি রুদ্রর কাছ থেকেই আন্দোলনের ব্যাপারে বিভিন্ন খোঁজখবর নিতেন। আর শনিবারের গুজবের তথ্যগুলো রুদ্রই তাকে জানিয়েছে বলে দাবি করেছেন নওশাবা।
মুফতি মাহমুদ খান বলেন, তথ্যটি অন্যের কাছ থেকে শুনলেও নওশাবা এমনভাবে অভিনয় করে ফেসবুকে বিষয়টি জানিয়েছেন যে, ঘটনাস্থলের আশেপাশেই তিনি ছিলেন। তিনি অস্থির হয়ে ছোটাছুটি করছিলেন আর আশেপাশে তাকাচ্ছিলেন। আমরা তাকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করবো। তার বিরুদ্ধে একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
আন্দোলন নিয়ে গুজবের ঘটনায় কারা জড়িত?- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মুফতি মাহমুদ খান বলেন, প্রাথমিকভাবে আমরা রুদ্র নামে এই একজনের নাম পেয়েছি। এছাড়া আন্দোলনকে কেন্দ্র করে পুরোনো অনেক ঘটনার ছবি ও ভিডিও ফুটেজ ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য একটি মহল কাজ করছে। আমরা বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছি। অনেকের ব্যাপারেই আমাদের কাছে তথ্য আছে। যারাই জড়িত থাকুক, কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতা আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীর ফোনালাপ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমরা যতটুকু শুনেছি, এই ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। মামলা অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে আইনগতভাবে যা যা ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন, তাই নেওয়া হবে।