স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, দেশের প্রশাসন জনগণকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করছে বলেই বিভিন্ন সময়ে জঙ্গি উত্থান, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের দমন করা সম্ভব হয়েছে। আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করতে চাই। আমরা মনে করি জনগণই আমাদের শক্তি।
আজ মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে শহীদ নূর হোসেন দিবস উপলক্ষে শহীদ নূর হোসেন স্মৃতি পরিষদ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে কামাল এসব কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, যারা দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে বিভিন্নভাবে বিশৃঙ্খলা করতে চায়, দেশে জঙ্গির উত্থান ঘটাতে চায়, জনগণই তার প্রতিবাদ করছে। এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে। আমাদের প্রশাসন জনগণকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করছে আর সে জন্যই আমরা সফল হচ্ছি, এগিয়ে যাচ্ছি।’
আসাদুজ্জামান বলেন, ‘আমরা অবশ্যই এই সমস্ত জঙ্গি, অরাজকতা সৃষ্টিকারীদের আইনের আওতায় এনে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি এবং তাদের দমন করতে সক্ষম হয়েছি। ষড়যন্ত্র শুধু গত বছরগুলোতে হয়নি, এখনো চলছে।’
নূর হোসেনের স্মৃতিচারণা করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান বলেন, নূর হোসেন শুধু কণ্ঠে গণতন্ত্রের কথা বলেননি। তাঁর মুখে, বুকে একই কথা ছিল। স্বৈরাচার নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক। আন্দোলনের পর আন্দোলনের মধ্যেই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদের দেশ যখনই কোনো সংকটের সম্মুখীন হয়, অবরোধ হয়, অন্যায়, অবিচার হয়, তখনই বাংলাদেশের স্বাধীনচেতা, সাহসী মানুষ প্রতিবাদ করে। বীর সেনানীদের আত্মাহুতিদের মাধ্যমেই তা প্রমাণ হচ্ছে। আর আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে লালন করে এগিয়ে যাচ্ছি।
১৯৮৭ সালের এই দিনে এইচ এম এরশাদের স্বৈরশাসনবিরোধী আন্দোলনে ঢাকায় পুলিশের গুলিতে যুবলীগের কর্মী নূর হোসেন শহীদ হন। ওই দিন বুকে-পিঠে ‘স্বৈরাচার নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক’—স্লোগান লিখে রাজপথে বের হয়েছিলেন নূর হোসেন। এরপর এই দিনটি শহীদ নূর হোসেন দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। আজ প্রতি বছরের মতো এবারও দিনটিতে আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে নূর হোসেনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছে।
কর্মসূচির মধ্যে ছিল শহীদের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ, শহীদ নূর হোসেন স্কয়ারে শ্রদ্ধা নিবেদন, আলোচনা সভা, সেমিনার, বিশেষ মোনাজাত প্রভৃতি। শহীদ নূর হোসেন দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দলটির সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী সকাল সাতটায় শহীদ নূর হোসেন স্কয়ারে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হয়। পরে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, সেচ্ছাসেবক লীগ ও অন্য সহযোগী সংগঠনের পক্ষ থেকেও ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। বিএনপির সহদপ্তর সম্পাদক শামীমুর রহমানের নেতৃত্বে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দলও নূর হোসেনের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানায়। এ ছাড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠন পুষ্পস্তবক অর্পণ করে। এ সময় তাঁর রুহের মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।