করোনা ভাইরাস সংক্রমণের মধ্যে খুলে দেওয়া হচ্ছে অফিস, দোকান-পাট। চালু হচ্ছে গণপরিবহন। তুলে নেওয়া হয়েছে লকডাউন।
শনিবার রাতে করোনা মহামারি ও পরবর্তী বাংলাদেশ নিয়ে ‘বিয়ন্ড দ্য প্যানডেমিক’ শীর্ষক ভার্চুয়াল একটি আলোচনা অনুষ্ঠান হয়। এতে সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী শাহ আলী ফরহাদ।
আলোচনায় অংশ নেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মুর্তজা, টাঙ্গাইল-৬ আসনের সংসদ সদস্য আহসানুল ইসলাম টিটু।
এছাড়া আরো ছিলেন- আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, উপপ্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, অর্থ ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক ওয়াসিকা আয়শা খান।
লকডাউন তুলে নেওয়ার বিষয়ে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘উন্নত দেশগুলো ইউরোপ, আমেরিকা, জার্মানি, স্পেন, এশিয়ার অন্যান্য দেশগুলো অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ধাপে ধাপে চালু করছে। বাংলাদেশও যেহেতু সারা বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন নয়, তার অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সারা বিশ্বের সঙ্গে। বাংলাদেশ কিন্তু গ্লোবাল ভিলেজের পার্ট। তাই বাংলাদেশকেও কিন্তু সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘সরকার ত্রাণ সহায়তা দিলেও জনসাধারণ প্রয়োজনের তাগিদেই ঘর থেকে বের হয়ে আসছিলেন। এমন প্রেক্ষাপটে ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড সচল করতে প্রধানমন্ত্রী সব দিক বিবেচনা করে লকডাউন তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্বল্প সংখ্যক মানুষ গিয়ে সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো সীমিত আকারে শুরু করতে চাই।’
গণপরিবহনে স্বাস্থ্য বিধি কঠোরভাবে মেনে চলার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আগামী ১৫ দিন আমাদের অফিস, গণপরিবহনে কঠোরতা অবলম্বন করতে হবে। যে যার জায়গা থেকে মানুষকে বোঝাতে হবে। তা না হলে সংক্রমণ বেড়ে যাবে।’
লকডাউনে শাস্তি দিয়ে খুব কাজ হবে এমনটি মনে করেন না নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মুর্তজা।
তিনি বলেন, ‘শাস্তি দিয়ে তো সব সময় আপনি সব কিছু করতে পারবেন না। এটা শাস্তির বিষয় না। আমার মনে হয়, এটা এখন ব্যক্তিগত পর্যায়ে এসে গেছে। আমি নিজে কতটা ভালো বুঝি, আমার আসলে কতটুকু সতর্কতার সঙ্গে চলা উচিৎ সেটা বোঝা উচিৎ সবার।’
অর্থনীতির চাকা ঠিক রাখতে লকডাউন তুলে দেওয়া সময়ের ব্যাপার ছিল বলে উল্লেখ করেন মাশরাফি। একই সঙ্গে স্বাস্থ্যবিধি মেনে জরুরি প্রয়োজনের কাজ সেরে মানুষ যেন দ্রুত ঘরে ফিরে যান, সে অনুরোধ জানান তিনি।
টাঙ্গাইল-৬ আসনের সংসদ সদস্য আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, ‘যেসব এলাকায় করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বেশি সেগুলোকে কৌশলে লকডাউনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।’
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘আমরা দেখেছি, লাখ লাখ মানুষ জীবিকার জন্য কর্মে যোগ দিতে চলে আসছে। তখন তাদের সুযোগ দিতে হবে। এতে বাধা দিলে উন্নয়নশীল একটি দেশ মুখ থুবড়ে পড়বে।’
আওয়ামী লীগের উপপ্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন বলেন, ‘জীবন ও জীবিকা একটা আরেকটার পরিপূরক। জীবন না থাকলে জীবিকা অর্থহীন হয়ে পড়ে। তেমনি জীবিকা না থাকলে জীবন অর্থহীন হয়ে পড়ে।’
আওয়ামী লীগের অর্থ ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক ওয়াসিকা আয়শা খান বলেন, ‘এ বছর তৈরি পোশাক শিল্পে ২৩ বিলিয়ন ডলারের মতো রপ্তানি হতে পারে। এতে বোঝা যাচ্ছে আমাদের অর্থনীতির ওপর কোভিড-১৯ এর প্রভাব কী পরিমাণ পড়েছে। জীবন ও জীবিকা উভয়কেই আমাদের চালু রাখতে হবে।’