গেল ডিসেম্বরই দেশকে ৩৬ বছর পর বিশ্বকাপে শিরোপা জিতিয়েছে বর্তমান ফুটবলের মহাতারকা লিওনেল মেসি। কাতারে জিতেছে বিশ্বকাপ সেরা হওয়ার খেতাবও। এছাড়া কিছু দিন আগে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে নিলেন বর্ষসেরা খেলোয়াড় হওয়ার অ্যাওয়ার্ড। দেশকে এত কিছু দেওয়ার পরও সেখানে একদল দুর্বৃত্ত অপেক্ষা করছে তাকে হত্যা করার জন্য! শুধু তাই নয়, মেসিকে হুমকি দিয়ে তার জন্মস্থান রোজারিওতে অবস্থিত তার শ্বশুরবাড়ির মালিকানাধীন এক সুপার শপে দুর্বৃত্তরা চালিয়েছে এলোপাতাড়ি গুলিও!
গোটা বিশ্ব জুড়েই পাওয়া যাবে মেসির ভক্ত। ক্লাব ফুটবল হোক কিংবা জাতীয় দল, বল পায়ে মেসির জাদু, প্রতিপক্ষ দলের কয়েকজন খেলোয়াড়দের মধ্য দিয়ে বল জালে জড়ানোর দক্ষতা ক্রীড়াপ্রেমিদের বাধ্য করেছে মেসির ভক্ত হতে। তবে তার দেশেই যে তাকে হত্যা করতে কিছু মানুষ অপেক্ষা করছে তা এ ঘটনা না ঘটলে হয়তো কেউ চিন্তাও করতে পারত না।
এদিকে দুর্বৃত্তরা পালানোর আগে মেসির জন্য একটি বার্তা ফেলে যায় রাস্তায়। যা পাওয়ার পর হইচই পড়ে গিয়েছে মেসি ভক্তদের মধ্যে। মেসির জন্য ফেলে যাওয়া সেই চিরকুটে লেখা ছিল, ‘তোমার জন্য আমরা অপেক্ষা করছি মেসি। পাবলো ইয়াভকিন (রোজারিওর মেয়র) একজন মাদকের চোরা কারবারি। ও তোমায় বাঁচাতে পারবে না।’ এই প্রথম মেসির শ্বশুরবাড়ির লোকেরা এ ধরনের হুমকি পেলেন।
এ বিষয়ে রোজারিওতে প্রসিকিউটর ফেদেরিকো রেবোলা বলেন, কর্তৃপক্ষ নিরাপত্তা ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করছে এবং ‘প্রাথমিক’ তদন্ত করা হচ্ছে। এছাড়া সান্তা ফে প্রদেশের বিচারমন্ত্রী সেলিয়া এরিনা বলেন, বৃহত্তর জনগোষ্ঠীকে ভয় দেখানোর উদ্দেশ্যে একটি ‘মাফিয়া’ গোষ্ঠী এই হামলা চালিয়েছে।
এদিকে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে আর্জেন্টিনার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো। তারা জানিয়েছে সুপার শপটি আপাতত বন্ধ থাকবে। এছাড়া ঘটনাস্থলের রাস্তায় সাধারণ মানুষের যাতায়াত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে হামলার এ ঘটনার পর মেসির পরিবারের পক্ষ থেকে কাউকে কথা বলতে দেখা যায়নি। তবে মেসির মায়ের সঙ্গে সেখানকার স্থানীয় এক সাংবাদিক যোগাযোগ করলে কথা বলেন তিনি। সংবাদকর্মী মাইতে পেনোনারির সঙ্গে কথা বলেন মেসির মা সেলিয়া। তিনি জানান, ‘আমার সঙ্গে মেসির মায়ের কথা হয়েছে।’ পেনোনারিকে মেসির মা বলেন, ‘ঐ সুপারমার্কেটটি ছিল রোকুজ্জোর পরিবারের। কিন্তু যাই হোক, আমরা তো আর বন্দি জীবন (কাস্টডি) কাটাতে পারি না। আমরা স্বাভাবিকভাবেই চলাফেরা করছি।’
প্রসঙ্গত, আর্জেন্টিনার রোজারিওতে মেসির একটি বাড়ি আছে। খেলোয়াড়ি জীবনের ব্যস্ততার ফাঁকে ছুটি পেলেই মাঝেমধ্যে সেই বাড়িতে গিয়ে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে ছুটি কাটান মেসি। বিশেষ করে বড়দিনে সেখানেই যান মেসি। এছাড়া কাতারে বিশ্বকাপ শিরোপা জেতার পর সেই বাড়িতেই উদযাপন করেছিলেন এলএমটেন।