নওগাঁ জেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়েছে আজ সোমবার, ১১ আগস্ট, দুপুর 1টায় নওগাঁ কনভেনশন সেন্টারে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, যার গতিবিধি ও নির্দেশনা প্রেসক্লিপে সাক্ষাৎকার ও বক্তব্যের মাধ্যমে জানানো হয়েছে। এ ছাড়া, সম্মেলনের উদ্বোধন করেন বিএনপির রাজশাহী বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত ও দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মনোয়নাধীন সদস্য ব্যারিস্টার আব্দুস সালাম, যিনি স্বাধীনতা যুদ্ধের শহীদ ও July আন্দোলনে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন।
সম্মেলনের উদ্বোধনের প্রথম পর্যায়ে জাতীয় সংগীত এবং দলীয় গান পরিবেশনের মাধ্যমে সম্মেলনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। এরপর, আলোচনা ও সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে বিকেল ৩টা থেকে শুরু হবে ভোটগ্রহণ, যা চলবে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। এই ভোটে ১৪টি ইউনিয়নের মোট ১ হাজার ৪১৪ জন ভোটার গোপন ব্যালটে নেতৃত্ব নির্বাচনের জন্য ভোট দেবেন, যেখানে সভাপতিসহ সাধারণ সম্পাদক ও দুটি সাংগঠনিক সম্পাদকের জন্য পদের জন্য নির্বাচন হবে।
বিগত ১৫ বছর পর এই সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যা নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ ও আউটলুকে পরিণত হয়েছে। এর আগে, ২০১০ সালে অনুষ্ঠিত দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে সাবেক সভাপতি সামসুজ্জোহা খান, সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম ও সাংগঠনিক সম্পাদক মামুনুর রহমান রিপন নির্বাচিত হয়েছিলেন। এরপর ২০১৫ সালে কমিটি বিলুপ্ত হওয়ার পর, ২০২২ সালে নতুন গঠন থেকে সাংগঠনিক কার্যক্রম চালিয়ে আসছিলেন কেন্দ্রীয় নির্দেশনায়।
এই সম্মেলনের জন্য মনোনয়নপ্রত্যাশীরা তদ্বির ও প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। মূলত, যারা দলীয় রাজনীতিতে দীর্ঘদিন সক্রিয় ছিলেন, কর্মীসমর্থক এবং মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের যারা ত্যাগים স্বীকার করেছেন, তাদের মধ্য থেকে নেতৃত্ব নির্ধারণ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। অনেকে মনে করছেন, নতুন নেতৃত্ব আসছে, আবার কেউ কেউ প্রথম সারির কয়েকজন নেতার মধ্যে একজনকে সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক হিসাবে দেখতে চান।
প্রতিনিধিদের মধ্যে কয়েকজন সাবেক নেতার নামও শোনা যাচ্ছে, যেমন— সাবেক সভাপতি নজমুল হক সনি, সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম ধলু, সাবেক আহ্বায়ক আবু বক্কর সিদ্দিক নান্নু, এ ছাড়া মাষ্টার হাফিজুর রহমান, মাসুদ হাসান তুহিন, আবদুস শুকুর, এস এম মামুনুর রহমান ও এ বি এম আমিনুর রহমানের নামও আলোচনায় রয়েছে।
সাধারণ সম্পাদক পদে মোকাবিলা করছেন চার প্রার্থী— বায়েজিদ হোসেন পলাশ, মামুনুর রহমান রিপন, শহিদুল ইসলাম ও আমিনুল হক বেলাল। এই পদে নির্বাচনের জন্য প্রচারণা চলমান থাকলেও, সম্মেলনের দিনই মনোনয়নপত্রের চূড়ান্ত নোটিস ও তালিকা ঘোষণা করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১০ সালে শেষ দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন সামসুজ্জোহা খান, সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম ধলু ও সাংগঠনিক সম্পাদক মামুনুর রহমান রিপন। এরপর ২০১৫ সালে কমিটি বিলুপ্ত হয়, যা ২০২২ সালে নতুন গঠনের মাধ্যমে শুরু হয়েছিল। গত রোববার (১০ আগস্ট) সম্মেলনের আগে, বিএনপি নেতা আমিনুল ইসলাম বেলাল তার প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন বলে জানানো হয়েছে, কারণ তিনি সম্মেলনের ভিমর্কিত তালিকা ও বিতর্কিত প্রার্থী তালিকা নিয়ে সমালোচনা করেছিলেন।
অতীতে, নেতাকর্মীরা আশা করছেন যে, এই সম্মেলনে সক্রিয়, ত্যাগী এবং দলীয় পরিচিত নেতারাই নেতৃত্বে আসবেন, যা দলের দীর্ঘমেয়াদি সুরক্ষা ও নেতৃত্বের ধারাবাহিকতা রক্ষা করবে। দলটি আশাবাদী যে, এই নতুন নেতৃত্বে জেলা বিএনপির কার্যক্রম আরও শক্তিশালী ও সুসংগঠিত হবে, এবং আগামী সংসদ নির্বাচনে দলের বিজয় নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।