রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ভবিষ্যতের পৃথিবী শুধুমাত্র উদার ও মানবিক মূলবোধের মানসিকতা সম্পন্ন মানুষের জন্য হলেও অহংকার ও আত্মীকেন্দ্রিকতার জন্য নয় বলে মনে করেন। গত শুক্রবার তিনি সেন্ট পিটার্সবার্গে এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেন যেখানে তিনি প্রযুক্তির দ্রুত বিকাশ, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং ভবিষ্যতের বিশ্বে মানুষের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করেন।
পুতিন বলেন, মানবতার ভবিষ্যৎ তাদের হাতে, যারা ভালোবাসা, বন্ধুত্ব এবং পরিবারের মূল্যায়ন করে— তারা সকলে মিলে একটি সুন্দর জীবন গড়ে তুলতে পারে, সাইবারস্পেসে আটকে থাকা অহংকারী একাকীদের নয়। তিনি বলেন, ভবিষ্যতের পৃথিবী অহংকারে ভরা নয়, যেখানে মানুষ কেবল নিজেদের স্বার্থে জীবন কাটায়। বরং তা সেই মানুষদের জন্য, যারা এখনও প্রেম, বন্ধুত্ব ও সমাজের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক বজায় রাখতে জানে, যারা তাদের প্রিয়জনদের ভালোবাসে এবং পরিবারের প্রতি দায়িত্ববোধ অনুভব করে।
তিনি আরও বলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আমাদের অনেক তথ্য বিশ্লেষণ করে ভবিষ্যদ্বাণী করতে পারে, কিন্তু বাস্তব ও মূল্যবোধের মূল সত্য চেতনায় মানুষই শক্তিশালী। বিজ্ঞান, শিল্পকলা এবং সামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে স্বীকৃত মৌলিক সমাধানগুলো কেবল মানুষের সৃজনশীলতা, প্রতিভা এবং স্রষ্টার অনুপ্রেরণার মধ্য দিয়ে পাওয়া সম্ভব। পুতিন মনে করেন, আমাদের এই নতুন প্রযুক্তির যুগে মানবজাতিকে সবসময় মানবিক মূল্যবোধের দিকে মনোযোগ দিতে হবে।
এছাড়া, তিনি বলেছেন, রাশিয়ানের পরিচয় ও জাতীয় চরিত্র মূলত পরিবারের শেকড় থেকে উদ্ভূত। গত বছর তিনি ‘পরিবার’ নামে একটি জাতীয় প্রকল্পের ঘোষণা দেন, যার লক্ষ্য ছিল সন্তান জন্ম বাড়ানো এবং পরিবারের সমর্থনে বিভিন্ন ব্যবস্থা চালু করা। রাশিয়া ইতিমধ্যে এই লক্ষ্যপূরণের জন্য বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করেছে, যেমন— প্রতিটি সন্তানের জন্য ভর্তুকি অর্থ প্রদান, মাতৃত্বকালীন সুবিধা বৃদ্ধি এবং আর্থিক সহায়তা। এসব উদ্যোগের মাধ্যমে, তিনি বলেন, শান্তি ও সমৃদ্ধির ভিত্তি গড়ে উঠবে এবং জাতীয় শক্তি জোরদার হবে।