নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু ধীরে ধীরে শান্ত পরিস্থিতির দিকে ফিরে আসছে। কারফিউ শিথিল হওয়ার পর থেকে দৈনন্দিন জীবন স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। শনিবার সকাল থেকে রাস্তার পরিবেশ অনেকটাই শান্ত হয়ে এসেছে, দোকানপাট খোলার পাশাপাশি যানবাহনের চলাচল স্বাভাবিক হতে দেখা গেছে।
প্রথমে জানা গেছে, শুক্রবার সন্ধ্যায় ৭৩ বছর বয়সী সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কি শপথ গ্রহণ করে অন্তর্বর্তীকালীন নেতা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এর আগে মঙ্গলবার, দেশজুড়ে ভয়াবহ বিক্ষোভের মুখে প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি পদত্যাগ করেন।
২০০৮ সালে এক দশকব্যাপী গৃহযুদ্ধের অবসান এবং রাজতন্ত্রের বিলুপ্তির পর থেকে নেপালে এই ধরনের ভয়াবহ বিক্ষোভের ঘটনা আরেকটি উল্লেখযোগ্য বেড়ে গেছে। এ ঘটনায় কমপক্ষে ৫১ জন নিহত হয়েছেন।
দেশটির নিরাপত্তা পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়, যখন সহিংস বিক্ষোভের কারণে সরকার পতন এবং সংসদে আগুন দেওয়া হয়। এর ফলে বুধবার থেকে বিপুলসংখ্যক সৈন্য রাস্তায় মোতায়েন করা হয়। তবে এখন তাদের উপস্থিতি কমিয়ে আনা হয়েছে বলে জানা গেছে। এ খবর এএফপি’র।
নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শপথ গ্রহণের মধ্য দিয়ে দেশের গর্বের বিষয় হলো, শৃঙ্খলা পুনরুদ্ধার, দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান এবং ভবিষ্যতকে দুর্নীতিমুক্ত করার অঙ্গীকার। ২০২৬ সালের ৫ মার্চ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে।
জনপ্রিয় জনগোষ্ঠীর মধ্যে এই পরিবর্তন বেশ সন্তুষ্টির সৃষ্টি করেছে। সমাজকর্মী সুরজ ভট্টরাই(৫১) বলছেন, ‘নেপাল এখন প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী পেয়েছে। আমরা আশা করি, আমাদের সাবেক প্রধান বিচারপতি দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর থাকবেন এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে যাবেন।’
কাঠমান্ডুর একটি দোকানে কর্মরত ২৩ বছরের তরুণী দুর্গা মাগার বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সিদ্ধান্ত আমাদের কাছে ভালো লেগেছে।’ তিনি আরও যোগ করেন, ‘বর্তমানে সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো দুর্নীতি। তরুণদের জন্য সেটা প্রধান উদ্বেগ। বড় রাজনৈতিক নেতার ঘোষণা বা সিদ্ধান্ত যেকোনো কিছুই হোক না কেন, সেটি কোনো বড় ব্যাপার নয়। সবচেয়ে দরকার সেটি বন্ধ করা।’
দুর্গা মাগার জানাচ্ছেন, ভবিষ্যৎ কি হবে তা জানা না থাকলেও, বর্তমানে তিনি সন্তুষ্ট। তবে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, দুর্নীতি পুরোপুরি নির্মূল করা এত সহজ নয়।