মৌলভীবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে ‘অধার্মিক’ নামে নাস্তিক্য-অজ্ঞেয়বাদী বিষয়ভিত্তিক একটি ম্যাগাজিন এর সম্পাদক এমডি সাইফুর রহমানসহ সকল লেখকের বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে মামলা দায়ের করেন হেফাজতে ইসলামের সক্রিয় কর্মী মো. আবু বকর সিদ্দিক আজিজ। মামলার পরপরই আদালত অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। (মামলা নংঃ ৩৬০/২০২৩)
দীর্ঘ তদন্ত ও পর্যবেক্ষণের পর গতকাল (২০ মে) পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) নারায়ণগঞ্জ থেকে মামলাটির অন্যতম অভিযুক্ত লেখক মোস্তফা জামান খানকে গোপন গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করে। পিবিআই-এর একজন কর্মকর্তা জানান, অভিযুক্ত ব্যক্তি বেশ কিছুদিন ধরে আত্মগোপনে ছিলেন এবং আধুনিক প্রযুক্তি ও গোয়েন্দা নজরদারির মাধ্যমে তাঁকে শনাক্ত ও আটক করা হয়। মোস্তফা জামান খানের বিরুদ্ধে পুলিশের পক্ষ থেকে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে এবং আজ (২১ মে) তাঁকে আদালতে হাজির করা হবে।
এ বিষয়ে মামলার বাদী মো. আবু বকর সিদ্দিক আজিজ সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, “আমরা গ্রেপ্তারের বিষয়ে অত্যন্ত সন্তুষ্ট। ইসলাম ও ধর্মের বিরুদ্ধে যারা কটাক্ষ ও অবিশ্বাস ছড়িয়ে যাচ্ছে, তাদের সবাইকে আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। সমাজে বিশৃঙ্খলা ও বিভ্রান্তি সৃষ্টি করার মতো কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিয়ে সকল ধর্মপ্রাণ নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানাই।”
গোটা ঘটনায় লেখক, সাংবাদিক ও মুক্তচিন্তার কর্মীদের মাঝে গভীর উদ্বেগ ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। ধর্ম অবমাননা সংক্রান্ত মামলাগুলো বাংলাদেশে বিতর্কিত ও আলোচিত। সম্প্রতি সংশ্লিষ্ট আইনের উদাহরণে দেখা গেছে, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে গ্রেপ্তার ও বিচার কার্যক্রম একাধিক ক্ষেত্রে হয়েছে। আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, ধর্মীয় বিশ্বাসের প্রতি সম্মান দেখাতে আইনের যথাযথ প্রয়োগ এবং মানবাধিকার সংরক্ষণ – এ দুইয়ের ভারসাম্য রক্ষা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
মামলার অন্যান্য অভিযুক্ত এখনো পুলিশি নজরদারিতে রয়েছে বলে জানা গেছে। সমাজে মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও ধর্মীয় সহনশীলতা নিয়ে তাই নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে।






