গতকাল বুধবার বিকেলে মিরপুরের রূপনগর এলাকায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে, যেখানে রাসায়নিক গুদামটি আগুনে ঝাঁপিয়ে পড়ে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তাদের মতে, এই গুদামটি অবৈধভাবে পরিচালিত হচ্ছিল এবং এর বিরুদ্ধে আগেই বেশ কয়েকবার নোটিশ দেয়া হয়েছিল। ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লে. কর্নেল তাজুল ইসলাম জানান, এই গুদামটি রাজধানীর অবৈধ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় ছিল এবং গুদামটির মালিকদেরও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তিনি আরও জানান, এই গুদামটি তৃতীয় ও দ্বিতীয় তলে পোশাক তৈরি ও রাসায়নিক সংরক্ষণের জন্য ব্যবহৃত হত, যেখানে কোনো সুরক্ষা ব্যবস্থা ছিল না। রাতের অগ্নিকাণ্ডের সময় পাশের আরও দুটি পোশাক কারখানা—‘আনোয়ার ফ্যাশন’ ও ‘এলএম এন্টারপ্রাইজ’—ও সম্পূর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দুর্ঘটনার ঘটনায় চারতলা ভবনের বিভিন্ন স্থান থেকে ১৬টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে, যার মধ্যে ১০টি স্বজনেরা শনাক্ত করেছেন। আগুনের ধোয়া ও বিষাক্ত গ্যাসের কারণে স্বল্প সময়ে বিপদের আশঙ্কা বাড়িয়ে তোলে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রায় ২৬ ঘণ্টা জ্বলন্ত থাকার পর রাত ২টা ২০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়। ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে তারা বলেন, রাসায়নিক গুদামের ভেতরের অবস্থা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। বিস্ফোরণের ভয়ে কোনওভাবেই এখন অভিযান চালানো সম্ভব হচ্ছে না। রাসায়নিক গুদামের বিভিন্ন ধরনের বিষাক্ত গ্যাস থেকে মানুষকে দূরে থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। গুদামজাত রাসায়নিকের নীতিমালা অমান্য করলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশংকা বাড়ে। এই অগ্নিকাণ্ডে নিহত শ্রমিক পরিবারের জন্য সরকার ২ লাখ টাকা আর আহতদের জন্য ৫০ হাজার টাকা অর্থ সহায়তা ঘোষণা করেছে। শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে, যারা দুর্ঘটনার কারণ, দায়ীদের শনাক্ত এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা রোধে সুপারিশ প্রদান করবে। এই ঘটনার কারণ তদন্তের জন্য কমিটি সাত কর্মদিবসের মধ্যে রিপোর্ট দাখিল করবে।