নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যবাহী কাবাডি খেলায় হাজারো দর্শকের উপস্থিতিতে মুখরিত হলো পর্যটন ও ক্রীড়া প্রেমীদের কেন্দ্রবিন্দু। এই অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয় উপজেলার বারদীর মেঘনা নদীর পাড়ে চেঙ্গাকান্দী বালুর মাঠে, গত শুক্রবার বিকেলে। স্থানীয় আশপাশের গ্রাম থেকে এসে দর্শকের বিশাল উপস্থিতি এই খেলাকে আরও জীবন্ত করে তোলে। মনে হয় যেন আবার ফিরে এসেছে গ্রামবাংলার সেই সোনালি দিনগুলো, যখন মাঠে জমজমাট কাবাডি খেলা হতো।
এটি আয়োজন করেন স্থানীয় তরুণরা, যারা বলছেন, ‘ক্রীড়াই শক্তি, ক্রীড়াই বল’— এই স্লোগানকে বাস্তবায়িত করতে এই ঐতিহ্যবাহী খেলাটিকে তরুণ প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিতে চান। এক সময় গ্রামবাংলার মাঠে কাবাডি, হাডুডু সহ নানা ধরনের খেলা ছিল জনপ্রিয়—কিন্তু আধুনিকতার ছোঁয়ায় তা ধীরে ধীরে হারিয়ে যেতে বসেছে। তবে এই বিশাল আয়োজনের মাধ্যমে দীর্ঘ সময় পর সেই হারানো ঐতিহ্য ফিরে পেয়েছে।
শুক্রবার দুপুর থেকে শুরু হয় কাবাডি খেলার প্রস্তুতি, চেঙ্গাকান্দী গ্রামের তরুণরা স্বেচ্ছায় প্রস্তুত হন খেলার জন্য। বাদ্য কলা আর উচ্ছ্বাসে গম্ভীরতা কাটিয়ে ওঠে, হাজারো দর্শক খেলা দেখতে আসে। ফুটবল বা ক্রিকেটের বদলে এই দিনটি ছিল কাবাডির জন্য, যা আবারো গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী খেলার দিকটি ফিরে আনতে সাহায্য করে।
খেলার আয়োজক তরুণ শরীফ হোসেন বলেন, ‘কাবাডি আমাদের জাতীয় খেলা হলেও এখন প্রায় বিলুপ্তির পথে। এখন তার প্রচলন খুবই কম।’ তিনি আরও যোগ করেন, ‘আমরা এর মাধ্যমে ছাত্র-যুবসমাজকে মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদের থেকেও দূরে রাখতে চাই এবং গ্রামীণ ক্রীড়া চর্চায় মনোযোগী করে তুলতে চাই।’
খেলার পরিচালনা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক শওকত কবির খোকন জানান, ‘এই আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য হলো যুবকদের মাদকমুক্ত ও সুস্থভাবে গড়ে তুলা, পাশাপাশি ঐতিহ্যবাহী কাবাডির বিকাশ ও সংরক্ষণ।’
সোনারগাঁ উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল আলী প্রধান অতিথি হিসেবে বলেন, ‘অত্র ধরনের নিয়মিত আয়োজন করলে তরুণ প্রজন্মের আগ্রহ আরও বাড়বে এবং ঐতিহ্য টিকে থাকবে। এতে করে তরুণরা মাদক ও অন্যান্য অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড থেকে সঠিক পথে থাকতে উৎসাহিত হবে।’ এই আয়োজনকে কেন্দ্র করে পুরো এলাকাটিই এক আবেগময় উৎসবে রূপ নেয়, যেখানে তরুণরা নতুন করে নিজেদের পরিচিতি ও পৃষ্ঠপোষকতা পান।






