অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে সিরিজের হোয়াইটওয়াশ এড়ালো ভারত। সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে (এসসিজি) সিরিজের তৃতীয় ও শেষ একদিনের আন্তর্জাতিক (ওডিআই) ম্যাচে গতকাল অস্ট্রেলিয়াকে নয় উইকেটে পরাজিত করে টিম ইন্ডিয়া। এই দুর্দান্ত জয়ের মূল কারিগর ছিলেন অভিজ্ঞ দুই তারকা—রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলি। ধারণা করা হচ্ছে, এটিই হবে তাদের অস্ট্রেলিয়া সফরের শেষ ম্যাচ, আর এই স্মরণীয় মুহূর্তটি উজ্জ্বল করে দিলেন এই দুই ব্যাটসম্যান।
অস্ট্রেলিয়ার দেওয়া ২৩৭ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ভারত মাত্র এক উইকেটে বাজিমাত করে। রোহিত শর্মা তাঁর ৩৩তম ওডিআই শতক পূরণ করেন, যা অস্ট্রেলির বিরুদ্ধে নবম। তিনি ১০৫ বলে এই শতক হাঁকান। অন্যদিকে, সিরিজের প্রথম দু’ম্যাচে শূন্য রানে আউট হওয়ার পর বিরাট কোহলি অপ্রতিরোধ্য ৭৪ রানের অবিচ্ছিন্ন ইনিংস খেলেন। এই দুজনের মধ্যে দ্বিতীয় উইকেটে গড়ে ওঠে ১৬৮ রানের অবিচ্ছিন্ন পার্টনারশিপ, যা মাত্র ১৭০ বলে সম্পন্ন হয়।
শুভমান গিলের (অবসর নেওয়া একমাত্র ব্যাটসম্যান) বিদায়ের পর কোহলির ব্যাটে উন্মাদনা সৃষ্টি হয়। তিনি প্রথম বলেই মিড-অন দিয়ে ফ্লিক করে রান নেন, যার ফলে দর্শকদের উচ্ছ্বাস আরো বেড়ে যায়। এসসিজি স্টেডিয়ামের ধারণক্ষমতা ছিল ৪,০৫৮৭ দর্শক, যারা অধিকাংশই ছিলেন ভারতীয় সমর্থক। তাঁদের উল্লাসের কেন্দ্রবিন্দু ছিলেন রোহিত ও কোহলি, যাদের প্রতিটি শটেই আলাদা আনন্দ দেখানো হয়।
টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় অস্ট্রেলিয়া। তারা ১৮৩ রানে ৩ উইকেট থেকে ২৩৬ রানে অলআউট হয়। শেষ ৭ উইকেটে মাত্র ৫৩ রান যোগ হয়েছে। অজি অধিনায়কের মতো গুরুত্বপূর্ণ পারফরম্যান্স করেন স্পিনার ম্যাট রেনশ, যিনি ৫৬ রান করে অভিষেক ওডিআই-তে অর্ধশতক হাঁকান। ওপেনাররা শুরুটা ভালো করলেও মিডল অর্ডারে কেউ বড় ইনিংস খেলার সুযোগ পাননি।
ভারতের বোলারদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পারফরম্যান্স করেন তরুণ পেসার হার্ষিত রানা, যিনি ৪/৩৯ রান দিয়ে ক্যারিয়ারের সেরা বোলিং করেন। রানার দুর্দান্ত বোলিংয়ের পাশাপাশি ভারতীয় স্পিনাররা নিয়মিত উইকেট তুলে নেওয়ায় অস্ট্রেলিয়ার রানের গতি কমে যায়। ওয়ার্ল্ড ক্রিকেটের অন্যতম প্রতিভাবান রানার এলবিডব্লিউ হয়েছিলেন ওয়াশিংটন সুন্দর দ্বারা। অস্ট্রেলিয়ান উইকেটরক্ষক অ্যালেক্স ক্যারি রানার বলে শ্রেয়াস আইয়ারের হাতে এক দুর্দান্ত ক্যাচ দিয়ে আউট হন, তবে পরে মাঠ থেকে আহত হয়ে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
অধিনায়ক রোহিত শর্মা শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকে ভারতের জয় নিশ্চিত করেন। যদিও এই জয় সিরিজের চূড়ান্ত ফলাফল ২-১ এর মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়া জয়ী হলেও, ভারতের জন্য এই জয় স্বস্তির বার্তা ও মনোবল ঘুরে দাঁড়ানোর অনুভূতি এনে দিয়েছে।






