দু’বছরেরও বেশি সময় ধরে গাজায় ইসরাইলি বাহিনী নির্মমভাবে আগ্রাসন চালাচ্ছে। এই সংঘাতের ফলে হাজার হাজার বেসামরিক নাগরিকের জীবন হুমকির মুখে পড়েছে, যার মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যাই বেশি। ইসরাইলি সেনারা নির্বিচারে গুলি চালিয়ে অসংখ্য অসহনীয় হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, যেখানে আন্তর্জাতিক মানবিক ও যুদ্ধবিধির কোনো তোয়াক্কা করা হয়নি। তারা বরং পৃথক দায়িত্বশীল অফিসারদের নির্দেশে এসব হত্যাকাণ্ড চালিয়েছেন। এসব ঘটনা সম্পর্কে সম্প্রতি ব্রিটিশ টেলিভিশনের প্রামাণ্যচিত্র ‘ব্রেকিং র্যাংকস: ইনসাইড ইসরাইলস ওয়ার’এ তাদের স্বচক্ষে দেখা ও কথার মাধ্যমে জানা গেছে। ডকুমেন্টারিটিতে ইসরাইলি সেনারা অকপটে নিজেদের কর্মকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছেন। অনেক সেনা নিজেদের নাম প্রকাশ না করে গোপনে কথা বলেছেন, আবার কেউ কেউ মুখ খুলেছেন রেকর্ডের সামনে। তাদের ভাষ্য, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা অভিযান চালানো হয়েছে এবং এর জন্য নানা অজুহাত ও ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির ব্যবহার করা হয়েছে। একজন ট্যাংক ইউনিটের কমান্ডার ড্যানিয়েল বলেছেন, ‘নির্বাচনী গুলি চালানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছে, কেউ বাধা দিতে পারবে না।’ পাশাপাশি তারা জানিয়েছেন, ইসরাইলি বাহিনী গাজা অঞ্চলের মানুষের ওপর মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে এবং খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রগুলোতে অবাধে গুলি করে হত্যাকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। ক্যাপ্টেন ইয়োতাম ভিল্কের মতে, আইডিএফের ট্রেনিংয়ে যা শেখানো হয়, তা হলো ‘মিন্স, ইনটেন্ট অ্যান্ড অ্যাবিলিটি’—অর্থাৎ, অস্ত্র, ক্ষতির লক্ষ্য ও সক্ষমতা। কিন্তু গাজায় এসবের কোনো মানে নেই। যারা নিষিদ্ধ এলাকায় হাঁটছেন, তার বয়স বা পরিচয় যা-ই হোক না কেন, সবই সন্দেহের কারণ। সেশন শেষে আরেক সেনা বলেছেন, জীবন ও মৃত্যু সম্পর্কিত নিয়ম বা ফায়ারিং প্রটোকল বলতে কিছু নেই; রণাঙ্গনে কমান্ডারের বিবেকই সিদ্ধান্ত নেয়। ফলে, কাদের শত্রু বা সন্ত্রাসী বলে গণ্য করা হবে, তা অকল্পনীয়ভাবে মনগড়া হয়ে গেছে। প্রামাণ্যচিত্রে দেখা যায়, গাজা যুদ্ধের ভয়াবহ অভিজ্ঞতাগুলো 많은 ইসরাইলি সেনার মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে।






