দুই প্রতিবেশী দেশ, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্ক বেশ কয়েকটি সংকটপূর্ণ পরিস্থিতির মাঝে রয়েছে। সম্প্রতি একের পর এক রাজধানীর মধ্যে আত্মঘাতী বোমা হামলার ঘটনার মাধ্যমে দুটি দেশই নিজেদের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযোগ তুলে ধরছে। এই পরিস্থিতিতে বিশ্লেষক ও কূটনীতিকরা বলছেন, রহস্যময় এ সব হামলার পেছনে কে বা কারা রয়েছে, তা এখনো স্পষ্ট নয়, তবে এর প্রভাব গভীর ও গভীরতর রাজনৈতিক অস্থিরতার দিকে নিয়ে যাচ্ছে।
গত মঙ্গলবার ইসলামাবাদে আদালত চত্বরে আত্মঘাতী হামলার ঘটনার পেছনে ভারত সমর্থিত সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সংশ্লিষ্টতা থাকার অভিযোগটি সামনে আসে। পাকিস্তানের প্রশাসন মনে করে, এই হামলায় ভারতের আঁতাত রয়েছে। অপরদিকে, ভারতের নয়াদিল্লিতে গাড়ি বিস্ফোরণের ঘটনায় পাকিস্তানের সমর্থিত সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর হাত রয়েছে বলে অভিযোগ উঠছে। ওই হামলার পর, ভারতের বিভিন্ন মহল তদন্তের নামে এর পেছনে বিভিন্ন সন্ত্রাসবিরোধী প্রকল্প চালু করে দেশের নিরাপত্তা জোরদার করেছে। অভিযোগ করা হয়, পাকিস্তান সমর্থিত গোষ্ঠীকে এই হামলার মূল কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
হামলার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ভারতের আম আদমি পার্টির এক নেতা দাবি করেন, এই ভয়াবহ হামলার জন্য একমাত্র পাকিস্তানের হস্তক্ষেপ থাকতে পারে। এ বিষয়ে তিনি আরও বলেন, এমনকি এটি যুদ্ধের কারণও হতে পারে। পাশাপাশি, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি অভিযোগ করেন, ভারত বিরোধী ষড়যন্ত্র চালানো হচ্ছে। ভারতের দাবি, গ্রেফতারকৃত এক ব্যক্তির কাছ থেকে জানা গেছে, পরবর্তী বছর ২৬ জানুয়ারি ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসে সহিংসতার পরিকল্পনা ছিল তাদের।
অন্যদিকে, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ একই দিন ইসলামাবাদে আদালত চত্বরের সামনে হামলার পেছনে ভারতের সংশ্লিষ্টতা থাকার অভিযোগ করেন। তিনি আরও বলেন, ক্যাডেট কলেজে হওয়া হামলার জন্যও চাইছেন ভারতের দিক থেকে। তবে, পাকিস্তানের সরকারের এই অভিযোগের কোনও প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেননি।
উল্লেখ্য, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই অভিযোগকে ‘ভিত্তিহীন’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রণধীর জয়সওয়াল বলেন, পাকিস্তানের দুর্বল নেতৃত্ব এই ধরনের নাটকের মাধ্যমে অন্য বিষয়ের দিকে মনোযোগ সরানোর চেষ্টাকারী।
বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রমাণ ছাড়াই দুই দেশ একে অপরের বিরুদ্ধে দোষারোপের খেলা খেলছে। তবে, এই ধরনের হামলা অব্যাহত থাকলে, এর পেছনে যাদের হাত থাকুক না কেন, তা ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ককে আরও ক্ষতিগ্রস্ত করবে বলে তারা সতর্কতা জারি করেছেন।






