২০ নভেম্বর প্রতিবারের মতোই এক বিশেষ দিন, যা কেবল ব্যক্তিগত উদযাপনের নয়, বরং ইতিহাসের এক স্তর স্পর্শ করে। এই দিনটি মানে একজন মানুষের জন্মদিন—তিনি তিনি জনাব তারেক রহমান, যিনি জন্মের পর থেকে নিজস্ব গৌরবের বাইরে উঠে এসে একটি দেশের স্বপ্ন, মানুষের আশার বাতিশ্রুতে পরিণত হয়েছেন। তার জীবনযাত্রা, সংগ্রাম এবং শান্ত থাকা শক্তি আজও বাংলার মানুষের হৃদয়ে এক আশার আলো।
তিনি জ্যেষ্ঠ নেতৃত্বের উত্তরাধিকার থেকে এগিয়ে গেছেন, কেবল আত্মীয়পরিচয়ের গর্বে নয়, কিন্তু নিজের শ্রম এবং মূল্যবোধের মাধ্যমে একজন সৎ নেতা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেন। তিনি জানতেন, নেতৃত্ব দাবি নয়, অর্জন করতে হয় মানুষের বিশ্বাস, যা তিনি গ্রামে, শহরে, নদীতে, পাহাড়ে, কৃষকের ঘরে এবং শ্রমিকের কুটিরে গিয়ে মানুষের সঙ্গে থাকার মাধ্যমে রচনা করেছেন। মানুষের কষ্ট শোনার ধৈর্য্য ও সত্যের প্রতি আজীবন অঙ্গীকার তাকে প্রকৃত নেতা হিসেবে গড়ে তুলতে সহায়তা করেছে।
তারেক রহমানের রাজনৈতিক দর্শন মূলত মানবিক মূল্যবোধের প্রতিফলন। তিনি রাজনীতিকে কেবল ক্ষমতার খেলা হিসেবে দেখেননি, বরং এটিকে মানুষের হৃদয়ে পৌঁছানোর মাধ্যমে শক্তিশালী করেছেন। তিনি বিশ্বাস করেন, একটি রাজনীতি তখনই জীবন্ত হয়, যখন সাধারণ মানুষের কথা ও স্বর বাস্তবতা হয়ে ওঠে। গ্রামাকাঙ্খা, শ্রমজীবী মানুষ, তরুণরা—সবার জন্যই তিনি স্বপ্ন দেখেছেন, তাদের অধিকার ও ক্ষমতা ফিরিয়ে আনতে সচেষ্ট। এর মাধ্যমে তিনি নতুন, জনমুখী রাজনীতির ভিত্তি প্রতিষ্ঠা করেছেন।
অপরদিকে, ব্যক্তিজীবনে তিনি সংযত ও শান্তিপ্রিয়। শব্দের শক্তিতে নয়, বরং দৃষ্টির গভীরতায় মানুষকে আশ্বস্ত করার এই অভ্যাস তাকে একটি শক্তিশালী নেতা হিসেবে আরও পরিপূর্ণ করে তুলেছে। তার নিজস্ব দুঃখ-ক্লেশ্য বা পরিবারের উদ্বিগ্নতা তিনি কখনো প্রকাশ করেননি, কারণ তিনি জানতেন, একজন নেতা হিসেবে নিজের কষ্টের মধ্যে থাকতে হবে দৃঢ়; আর মানুষের কষ্টকে নিজের হৃদয়ে ধারণ করে সমাধানের পথ খুঁজতে হবে। এই নীরব শক্তি তাকে দুর্বল নয়; বরং সে প্রকাশ করে একজন সত্যিকার নেতার অসীম শক্তির পরিচয়।
বিরূপ সময়ের অগ্নিপথে তিনি অবিচল ছিলেন। হাসিনার শাসনের দমন-পীড়নের মাধ্যমে তার জীবনেও অন্ধকারাচ্ছন্ন এক অধ্যায় সৃষ্টি হয়েছে। অমানবিক নির্যাতনের বেদনা তিনি চাপা দিয়ে, অনিশ্চিত জীবনযাপন করেছেন, অসংখ্য মামলার ভার বহন করে। জীবন ও পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকলেও, তার মন ও হৃদয় সব সময় বাংলাদেশের জন্য তরতর করে চলেছে। দেশের বাইরে থাকলেও, তার দেশপ্রেম ও আবেগ অটুট।
রাষ্ট্রের প্রতি তার দার্শনিক দৃষ্টি হল মানবাধিকার ও নিঃস্বার্থ সেবা। তিনি একটি এমন সমাজের স্বপ্ন দেখেন যেখানে গণতন্ত্রের মূলসূত্র—সৎ, ন্যায্য, এবং মানুষের মুক্তির জন্য প্রতিষ্ঠিত। তিনি চান, এমন একটি রাষ্ট্র যেখানে আইন ও ন্যায় রাজনীতিের ভিত্তি, যেখানে পার্থক্য থাকলেও মানুষের অন্তরে সবসময় সম্মান ও সমতা বজায় থাকে।
তার জীবন ও সংগ্রাম একদিকে যেমন তার অসামান্য নেতৃত্বের স্বাক্ষর, অন্যদিকে তার অপ্রাপ্তি ও শোকের কিছু গল্পও বহন করে। তিনি অসংখ্য মানুষের ভালোবাসার স্বপ্ন দেখেছেন, তরুণ-যুবকদের উৎসাহ দিয়েছেন, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের পক্ষে আওয়াজ তুলেছেন। কিন্তু সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে বাধার পরিমাণও কম নয়—মাতৃভূমি থেকে দূরে থাকা, পরিবারের অশান্তি, সহযোদ্ধাদের হারানো, বিশাল সংগ্রামের মধ্য দিয়ে যাওয়া। এই সবই তাকে আরও দৃঢ়, মানবিক ও দৃষ্টিভঙ্গি সমৃদ্ধ করে তুলেছে।
আজকের বাংলাদেশের প্রতীক্ষা একটাই—প্রিয় নেতা তারেক রহমানের ফেরার। তিনি আসলেই কেবল একজন নেতা নন, এক মানবিক নিরীক্ষার প্রতীক, গণতন্ত্রের পুনর্জন্মের উপকরণ। তাঁর প্রত্যাবর্তন মানে দেশের মুক্তি, আইনের শাসন, নৈতিকতার ফেরত আসা। এটাই এখন বাংলাদেশের মানুষের প্রত্যাশা, একটি নতুন সূর্যোদয়ের জন্য এগিয়ে চলার আকাঙ্ক্ষার স্বপ্ন।
প্রিয় নেতা, আপনার জন্মদিনের এই শুভক্ষণে কামনা করি, আপনি যেন আলোকিত হোন, আপনার প্রত্যাবর্তনে আমাদের দেশ আরও উজ্জ্বল ও শান্তিপূর্ণ হয়ে উঠুক। মহান মাল্লাহ তা’য়ালা আপনার দীর্ঘ জীবনের অভিসম্পাত করুন। আমিন।






