জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর মাগুরা জেলা কার্যালয় কর্তৃক মহম্ম্মদপুর উপজেলার বালিদিয়া বাজারে ব্যাপক অভিযান পরিচালিত হয়েছে। এ সময় দুটি প্রতিষ্ঠানকে মোট ১,৫৫,০০০ টাকা জরিমানা করা হয়, যেখানে বেশি দামে সার বিক্রি ও ভাউচারের অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া যায়।
সোমবার (৮ ডিসেম্বর) দুপুরে এই অভিযান চালানো হয়। এতে বিসিআইসি ও বিএডিসি সার ডিলার, সার-কীটনাশকের সাব ডিলার, বীজ, ফার্মেসি ও অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান তদারকি করা হয়।
অভিযানে মেসার্স মিলন এন্টারপ্রাইজ নামে একটি বিসিআইসি ও বিএডিসি সার ডিলার প্রতিষ্ঠানে তল্লাশি চালানো হয়। সেখানে দেখা যায়, ডিলাররা সাধারণত রাতের পরিবর্তে দুপুর ১২টার পরে দোকান খোলেন, ফলে কৃষকরা বেশি দামে সার কিনতে বাধ্য হন। সমীক্ষার সময় বিক্রয় রেজিস্টার ও ভাউচারের মধ্যে নানা অসংগতি ও গড়মিল ধরা পড়ে। কৃষকদের ভাউচার না দিয়ে এবং নিজের ইচ্ছেমতো ভাউচারে সারের তথ্য লিখে বিক্রি করার অভিযোগ রয়েছে।
গোপালপুরের কৃষক তবিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা যায়, তিনি গত রবিবার (৭ ডিসেম্বর) ৪ বস্তা ডিএপি ১৩৫০ টাকা করে কিনেছেন, কিন্তু তাকে ভাউচার দেয়া হয়নি। তার নামে ২ বস্তা ইউরিয়া, ২ বস্তা ডিএপি ও ১ বস্তা এমওপি সার দেখানো হয়েছে সরকারি মূল্যে, যা ঠিক নয়। এছাড়া, লক্ষ্মীপুর গ্রামের রাতুলের কাছ থেকে ১৫ কেজি পটাশ সার নেওয়া হয়, কিন্তু তার ভাউচারে ৫০ কেজির লেখা রয়েছে। ইউরিয়া ও অন্য সারগুলোর ভাউচারে বিক্রির পরিমাণও বিভ্রান্তকর ছিল।
অভিযানে আরও দেখা যায়, ডিলাররা সরকারি নির্ধারিত মূল্যের থেকে বেশি দামে সার বিক্রি করলেও না ভাউচার দেন ও না মূল্যতালিকা প্রদর্শন করেন। রেজিস্টার এবং অন্যান্য নথিপত্র পর্যালোচনায় ধরা পড়ে প্রকাশ্যই অনিয়ম। প্রচুর মেয়াদ উত্তীর্ণ কীটনাশকও জব্দ করা হয়।
এসব অপরাধের জন্য ডিলার মিলন কুমার ঘোষের বিরুদ্ধে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ এর ৪০, ৪৫ ও ৫১ ধারায় জরিমানা করা হয়। তার দোেকানে অতিরিক্ত দামে সার বিক্রী ও যথাযথ ভাউচার না দেওয়ার জন্য মোট ১,৫০,০০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
তদ্রুপ, আরেকটি সাব ডিলার প্রতিষ্ঠান মেসার্স বিশ্বাস ট্রেডার্সকেও ক্রয়-বিক্রয় ভাউচার না থাকা, মূল্যতালিকা অনুপস্থিতি ও অতিরিক্ত দামে সার বিক্রির অপরাধে ৫,০০০ টাকা জরিমানা করা হয়। সবাইকে এ ধরণের আইন বিরুদ্ধ কার্যকলাপ না করার সতর্ক করা হয়।
অভিযানের অংশ হিসেবে অন্যান্য পণ্যের দোকানগুলোও তদারকি করা হয়। এ সময় সবাইকে ন্যায্যমূল্যে পণ্য বিক্রয়, মূল্যতালিকা প্রদর্শন ও ক্রয়-বিক্রয় ভাউচারের গুরুত্ব বোঝানো হয়।
অভিযান পরিচালনা করেন জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সজল আহম্মেদ। এ কাজে জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা মো: রবিউল ইসলাম ও পুলিশের একটি টিম সহায়তা করেন।






