গত তিন দিনে দেশের স্বর্ণের দাম ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। রোববার (১৪ ডিসেম্বর) থেকে ভালো মানের, অর্থাৎ ২২ ক্যারেটের স্বর্ণ বিক্রি হয়েছে প্রায় ২ লাখ ১৫ হাজার টাকায়, যা এর আগে ছিল প্রায় ২ লাখ ১২ হাজার ১৪৫ টাকা। এই দাম বৃদ্ধির মূল কারণ হলো বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম বৃদ্ধির প্রভাব।
বাংলাদেশের জুয়েলার্স সমিতি জানায়, গত শুক্রবার স্বর্ণের ভরির দাম মানে ১ হাজার ৫০ টাকা বৃদ্ধি পায়, এরপর রোববার থেকে আরও ৩ হাজার ৪৫২ টাকা যোগ হয়। ফলে তিন দিনে মোট দাম বেড়েছে সাড়ে ৪ হাজার টাকার মতো। এর আগে বিশ্ববাজারে আউন্সপ্রতি স্বর্ণের দাম ৪ হাজার ৩০০ ডলার ছাড়িয়েছে।
নতুন দর অনুযায়ী, রোববার থেকে হলমার্ক করা ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম এখন ২ লাখ ১৫ হাজার ৫৯৭ টাকা, যা ছিল এর আগে ২ লাখ ১২ হাজার ১৪৫ টাকায়। অর্থাৎ, শনিবারের তুলনায় রোববার দাম বেড়েছে ৩ হাজার ৪৫২ টাকায়।
অন্যদিকে, ২১ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম এখন ২ লাখ ৫ হাজার ৮০০ টাকা, যা আগে ছিল ২ লাখ ২ হাজার ৪৯৯ টাকা। অর্থাৎ, ভরিতে দাম বেড়েছে ৩ হাজার ৩০১ টাকা।
এছাড়াও, ১৮ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম বেড়ে হয়েছে ১ লাখ ৭৬ হাজার ৩৯৫ টাকা, যা ছিল ১ লাখ ৭৪ হাজার ৫৭২ টাকা। পেশাদার বা সনাতন পদ্ধতির স্বর্ণের দামও বেড়ে ১ লাখ ৪৬ হাজার ৮৩৮ টাকা দাঁড়িয়েছে, আগের দাম ছিল ১ লাখ ৪৪ হাজার ৪২৪ টাকা।
বিশ্ববাজারের তথ্যানুযায়ী, চলতি বছরে স্বর্ণের দাম প্রায় ৬০ শতাংশ বেড়েছে। এই পরিস্থিতিতে গোল্ডম্যান স্যাকস মনে করছে, অতিরিক্ত চাহিদা না থাকলেও বিনিয়োগকারীরা স্টকে বিনিয়োগের পাশাপাশি স্বর্ণ কেনাকাটায় আগ্রহ দেখাচ্ছেন, ফলে এর দাম আরও বাড়বে। যত বেশি বিনিয়োগ হবে, স্বর্ণের দাম ততই বেশি বৃদ্ধি পাবে বলে ধারণা তাঁদের।
গোল্ডম্যান স্যাকস জানাচ্ছে, আগামী বছর স্বর্ণের দাম বেশি বাড়বে না, তবে এই বছর যে দুটি কারণের জন্য দাম বৃদ্ধি পেয়েছে, সেগুলি বজায় থাকবে। একদিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক স্বর্ণ কিনে চলেছেন, অন্যদিকে ফেডারেল রিজার্ভ সুদহার কমিয়ে দিচ্ছে। ডিসেম্বরেও সুদহার কমিয়েছে তারা।
বিশ্লেষকদের মতে, ভূরাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে বিনিয়োগকারীরা নিরাপদ বিনিয়োগের জন্য স্বর্ণে ঝুঁকছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ব্যাবহারিক বাণিজ্যনীতির কারণে ডলারের বদলে স্বর্ণে বিনিয়োগের ঝোঁক বাড়ছে, যা স্বর্ণের চাহিদা এবং দর বাড়িয়ে দিচ্ছে।






