ময়মনসিংহের ভালুকায় ধর্ম অবমাননার অভিযোগে এক যুবক দিপু চন্দ্র দাসকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। ঘটনার পর ঘটনাস্থলে আগুন দেওয়ার পাশাপাশি তাঁর লাশকে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়, যা দেখে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। তবে এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে বেশ কিছু অজানা কারণ রয়েছে বলে র্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
র্যাব-১৪ এর পরিচালক নাইমুল হাসান সাংবাদিকদের জানান, এই ঘটনায় মোট ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে অন্যতম हैं পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস বিডি লিমিটেডের ফ্লোর ম্যানেজার আলমগীর হোসেন (৩৮) এবং তার সহকারী মিরাজ হোসেন আকন (৪৬)।
ঘটনার সময়সূচী ব্যাখ্যা করে র্যাব কর্মকর্তা বলেন, ‘বিকাল ৪টায় কারখানার ফ্লোর ইনচার্জ দিপুকে ইস্তফা দিতে বাধ্য করে। এরপর উত্তেজিত জনতা তার উপর চড়াও হয় এবং তাকে হ্যান্ডওভার করে দেয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘অভিযোগ প্রমাণের জন্য কেন পুলিশকে সঠিক প্রতিবেদন দেয়া হয়নি, তা তদন্তের আওতায় আনা হচ্ছে। আমরা ঘটনাস্থল ও পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে দেখছি, কোনো পূর্বশত্রুতা বা অন্য কোনো উদ্দেশ্য ছিল কি না। এর সঙ্গে জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।’
র্যাবের দাবী, এই ধরনের নির্মম হত্যা ও আগুন দিয়ে দগ্ধ করার ঘটনা আইনসম্মত নয় এবং সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এর নিন্দা জানিয়েছেন। পাশাপাশি মামলাটি এখন থানা পর্যায়ে তদন্তাধীন থাকলেও র্যাবও ‘ছায়া তদন্ত’ চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।
অপরাধে জড়িত অন্য আটজনের মধ্যে থাকছেন তারেক হোসেন (১৯), লিমন সরকার, মানিক মিয়া (২০), এরশাদ আলী (৩৯), নিঝুম উদ্দিন (২০), আজমল হাসান সগীর (২৬), শাহিন মিয়া (১৯) এবং মো. নাজমুল। এর মধ্যে তিনজনকে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।
উল্লেখ্য, ওই রাতেই ভালুকা উপজেলায় ধর্ম নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে দিপু চন্দ্র দাসকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। পরে তার লাশে আগুন দেওয়া হয়। ঘটনার পর মহাসড়ক দুই ঘণ্টা অবরোধে রাখা হয়, পরিস্থিতি শান্ত করা জন্য পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়।
ঘটনাস্থলে দিপুর ছোট ভাই অপু চন্দ্র দাস বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। এই ঘটনায় স্থানীয়সহ দূরবর্তী বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।






