বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ফসলি জমির উপরের টপ সয়েল বিক্রির এক দ্রুত বাড়তে থাকা হিড়িক দেখা গেছে। এই অবৈধ কার্যক্রমের ফলে পার্শ্ববর্তী জমির কৃষকরা বাধা দিলেও, জোরপূর্বকভাবে মাটি কেটে নেওয়া হচ্ছে। উপজেলা প্রশাসন দ্রুত এই অবৈধ চিত্র প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন।
সারিয়াকান্দি উপজেলার ফুলবাড়ি ইউনিয়নের মাঝবাড়ী গ্রামে দেখা গেছে, তিনটি ফসলি জমির টপ সয়েল কেটে ট্রাকের মাধ্যমে বিভিন্ন ইটভাটায় সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এই কাজটি বেশ কয়েক দিন ধরে অব্যাহত রয়েছে। স্থানীয় কৃষক মিজানুর রহমান পিন্টু, জিয়াউর রহমান মোল্লা ও আবু বক্কর সিদ্দিক তাদের জমির উপরের মাটি বিক্রি করেছেন। একইভাবে গ্রামের অন্য একজন আব্দুল মোল্লা ও আবু বক্কর সিদ্দিক বালুমহাল থেকে মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছেন।
স্থানীয় আইন অনুযায়ী, কৃষিজমির টপ সয়েল কাটা দণ্ডনীয় অপরাধ। এই অপরাধের জন্য দুই বছরের কারাদণ্ডের বিধান থাকলেও, অনেক জোরপূর্বক মাটি কাটছে এবং তা অখাদ্যভাবে অব্যাহত রয়েছে।
প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, মাত্র কয়েকদিনে করে প্রায় ৫০ শতাংশ জমির টপ সয়েল কাটা শেষ হয়েছে, যার ফলে জমিগুলো ৩ থেকে ৪ ফুট নিচু হয়ে গেছে। ট্রাক পরিবহন ও ছোট রাস্তা নির্মাণের কারণে কৃষিজমির ওপর দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সড়কও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই কারণে ওই সড়কের বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্ত উঠে এসেছে, তবে দ্রুত সময়ের মধ্যে তা অনেকটাই সংস্কার করা হয়েছে।
কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা তাদের জমির মাটি কাটতে বাধা ছিল। তবে ইটভাটার লোকজন জোরপূর্বক মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে। এতে বর্ষাকালে তাদের জমি ভেঙে যাওয়ার ভয় কবলে পড়েছে। ওপরের টপ সয়েল বিক্রি হওয়ার কারণে জমির উর্বরতা কমে যাচ্ছে, যা খাদ্য উৎপাদন বা খাদ্য ঘাটতির জন্য ঝুঁকি সৃষ্টি করছে।
এ ব্যাপারে কৃষক শহিদুল ইসলাম মজনু বলছেন, তার জমির চারপাশের জমি এখন অনেক নিচু হয়ে গেছে। তিনি মনে করেন, বর্ষাকালে তার জমি ভেঙে যাওয়ার। তারা গ্রামবাসী মিলে প্রতিবাদ জানালেও, জোরপূর্বক মাটি কাটা চালিয়ে যাচ্ছে ট্রাকের মাধ্যমে। এতে পাকা রাস্তার ক্ষতি হয়েছে, যার জন্য তারা প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ চেয়েছেন।
সারিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুমাইয়া ফেরদৌস বলেছেন, এটি আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। কৃষিজমির টপ সয়েল কাটা অবৈধ ও অপরাধজনক। খুব শিগগিরই এই বিষয়টি দেখার জন্য অবস্টানমূলক অভিযান চালানো হবে। তারা প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন যেন এই অবৈধ কার্যক্রম বন্ধ হয় এবং কৃষিজমির সুরক্ষা নিশ্চিত হয়।






