দীর্ঘ ১৮ বছরের নির্বাসনের পর অবশেষে দেশের মাটিতে পা রাখছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আগামী ২৫ ডিসেম্বর তিনি প্রত্যাবর্তন করবেন, এ খবরে সারাদেশের মতোই ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনা ছড়িয়ে পড়েছে বগুড়ার মানুষজনের মধ্যে। বিশেষ করে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের জন্মভূমি হওয়ায় এই দিনের গুরুত্ব অনেক বেশি বগুড়ার মানুষের জন্য। দীর্ঘ এই সময়ের রাজনৈতিক বঞ্চনা, অগ্রগতির অবরুদ্ধ পরিস্থিতি এবং অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে দেশপ্রেমিক এই ‘ঘরের ছেলে’ ফিরে আসছেন—aর এক আবেগের পরিবে বিশাল ধরনের আনন্দের ঢেউ জড়ো হয়েছে বাংলার এই ভূখণ্ডে।
তারেক রহমানের আসন্ন প্রত্যাবর্তনকে কেন্দ্র করে তাঁর পূর্বপুরুষদের ভিটা গাবতলী উপজেলার বাগবাড়ি গ্রামসহ পুরো জেলায় ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে। জানা যায়, এই বাগবাড়ি গ্রাম থেকেই ৪৩ বছর আগে এরশাদের বিরোধী আন্দোলনের সূচনা করেছিলেন বেগম খালেদা জিয়া। এলাকার সকলে আশা করছেন, দেশে ফিরে এরপর তিনি অবশ্যই তাঁর পরিবারের স্বজন, আত্মীয়-স্বজন ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের সান্নিধ্যে আসবেন। প্রবীণ বাসিন্দা আছির উদ্দিনের মতে, তারেক রহমানের এই প্রত্যাবর্তন সাধারণ মানুষের জন্য বার্তা নিয়ে আসবে সুখ-শান্তির। অন্যদিকে তরুণ প্রজন্ম মনে করছে, তাঁর ফেরার মাধ্যমে এলাকার অঙ্গন উজ্জ্বল হয়ে উঠবে।
স্থানীয় নেতৃবৃন্দ জানিয়েছেন, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে বগুড়াবাসীর উপর বিভিন্ন চাপ থাকলেও ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর তারা এখন স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছেন। তারেক রহমানকে বরণ করে নেয়ার জন্য বগুড়ার নেতাকর্মীরা প্রস্তুত হচ্ছেন, প্রায় ১ হাজার গাড়ির একটি বিশাল বহর নিয়ে ঢাকায় যাত্রা করার পরিকল্পনা রয়েছে। গাবতলী উপজেলার বিএনপি সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক জানান, তরুণ থেকে বৃদ্ধ, কৃষক থেকে শ্রমজীবী—সব শ্রেণির মানুষ তাদের প্রিয় নেতা একনজর দেখার জন্য কৌতূহলী। ঢাকায় আনুষ্ঠানিকতার পর আগস্টের শুরুতেই তাঁর বগুড়া সফর হওয়ার কথা রয়েছে, যেখানে তিনি নিজের নির্বাচনি কেন্দ্র বগুড়া-৬ ও মায়ের আসন বগুড়া-৭-এ জনসভা করবেন।
বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম বাদশাহর মতে, পৈতৃক ভিটায় ফেরার মাধ্যমে তিনি তাঁর শৈশব ও কৈশোরের স্মৃতি তুলে ধরবেন সকলের সঙ্গে। উল্লেখ্য, আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি বগুড়া-৬ (সদর) আসন থেকে প্রথমবারের মতো সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁর প্রত্যাবর্তনের পথ অনুযায়ী, প্রথমে তিনি সিলেটে অবতরণ করবেন এবং পরে ঢাকায় এসে তাঁর মা বেগম খালেদা জিয়াকে দেখা করবেন, যিনি বর্তমানে এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এরপর পূর্বাচলে এক সংবর্ধনা সভায় যোগ দেবে তারেক রহমান, যা থেকে তার রাজনৈতিক কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক সূচনা হবে। এই মুহূর্তে বগুড়ার হাজারো নেতাকর্মী তার অপেক্ষায় ক্ষণগণনা করছেন, ইতিমধ্যেই এই দিনটির জন্য আলতো করে অপেক্ষা বাড়ছে।






