দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসন জীবন শেষে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশে ফিরে আসার পর তার পদচারণায় ঝঞ্চিত হয়েছে গুলশান এলাকা। বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) সকালে গুলশান-২ এর গুলশান নর্থ অ্যাভিনিউর ১৯৬ নম্বর বাড়িতে যান তিনি, যেখানে তার উপস্থিতিতে পুরো আশেপাশের সড়কসহ এলাকা কঠোর নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে যায়। বাড়িটির চারপাশে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে, সিসিটিভি ক্যামেরা نصب করা এবং স্থায়ী ও অস্থায়ী নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে। আওয়ামী লীগ বা সরকারের নিরাপত্তা বাহিনী ছাড়াও বিএনপির নিজস্ব সংস্থাগুলোর তৎপরতা দেখা গেছে, যা পুরো এলাকা কড়া নজরদারিতে রেখেছে। আজকের ঘটনাপ্রবাহ অনুসারে, বুধবার রাত থেকেই বাড়িটির সামনে সাধারণ মানুষের প্রবেশ ও চলাচল কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ব্যাপক টহল দেয় এবং বিভিন্ন চেকপোস্ট বসানো হয়। সেখানে পুলিশ, বিজিবি, চেকপোস্ট ক্যাম্প এবং বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন। সম্পূর্ণ এলাকা ঘিরে ফেলা হয়েছে এবং অজানা কারও প্রবেশ বা বাহিরে যাতায়াতের অনুমতি নেই। জানা গেছে, সরকারি নিরাপত্তার পাশাপাশি বিএনপি নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা শক্তপোক্তভাবে গড়ে তুলেছে। শুধু তারেক রহমানের বাসভবন নয়, গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয়েও তার জন্য আলাদা কক্ষ তৈরি করা হয়েছে। এছাড়াও, ৯০ নম্বর সড়কের ১০/সি নম্বর বাড়িতে নতুন করে নির্মিত চারতলা রাজনৈতিক কার্যালয় থেকে নিয়মিত কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এখান থেকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক কার্যক্রম চালানো হবে বলে জানা গেছে। নতুন কার্যালয়ের দোতলায় আধুনিক ব্রিফিং রুম রয়েছে; অন্যান্য বিভাগের জন্য গবেষণা সেল এবং নির্দিষ্ট বিভাগীয় দপ্তর গড়ে তোলা হয়েছে। যেখানে নির্বাচন, নীতি ও রাষ্ট্রীয় সংস্কার বিষয়ক প্রস্তুতি চলমান। একই সময়, আশেপাশের গলি ও সড়কে তারেক রহমানের ছবি সংবলিত ব্যানার ও ফেস্টুন দেখা যায়। বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর), দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসিত জীবন শেষ করে দেশে ফিরে এলেন তারেক রহমান। তিনি বিমানবন্দরে উপস্থিত হন এবং সংবর্ধনা মঞ্চে বক্তব্য দেন। এরপর তিনি দ্রুত হাসপাতালে যান এবং তার মা, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে দেখতে যান। এরপরই যান গুলশানের এই ঐতিহাসিক ১৯৬ নম্বর বাড়িতে। এই বাড়িটি বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শহীদ জিয়াউর রহমান ঢাকায় মারা যাওয়ার পর তৎকালীন সরকার এই বাড়ি খালেদা জিয়াকে বরাদ্দ দেয়। বছর বছর এখানে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক বৈঠক এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের আয়োজন হয়ে থাকে। কিছু মাস আগে, এই বাড়ির মালিকানা আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপি চেয়ারপারসনের নামে হস্তান্তর করা হয়। পাশেই রয়েছে ‘ফিরোজা’, যা খালেদা জিয়ার দীর্ঘদিনের বাসস্থান। বর্তমানে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকলেও, এই বাড়িটি প্রস্তুত করা হয়েছে তার দীর্ঘ প্রত্যাবর্তনের জন্য। অন্যদিকে, তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের খবরে বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উচ্ছ্বাস দেখা গেছে। দলের নেতাদের মতে, এটি কেবল একজন নেতা দেশে ফিরে আসার ঘটনা নয়, এটি বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন এক অধ্যায়ের সূচনার বিষয়।






