ইউক্রেনের যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে রাশিয়ার অস্ত্র ও গোলাবারুদ উৎপাদন ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এই সময়ে দেশটির সামরিক শিল্পখাতে উৎপাদন স্বীকৃতভাবে ২২ গুণ বেড়েছে। শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) ক্রেমলিনে প্রতিরক্ষা শিল্পের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক বৈঠকে এই তথ্য জানান রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
পুতিন বলেন, ট্যাংক উৎপাদন ২.২ গুণ, সামরিক বিমান উৎপাদন ৪.৬ গুণ এবং আঘাত হানার সক্ষম অস্ত্র ও গোলাবারুদ উৎপাদন গুরুত্বপূর্ণভাবে ২২ গুণ বেড়েছে। তিনি আরও উল্লেখ করেন, বিশেষ সামরিক অভিযানে অংশ নেওয়া সেনাদের প্রয়োজনীয় সব সরঞ্জাম সরবরাহে দেশটির প্রতিরক্ষা শিল্প শক্তিশালীভাবে কাজ করছে। কৌশল ও যুদ্ধের ধরন পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে এই শিল্পের উৎপাদনও ক্রমাগত পরিবর্তিত হচ্ছে।
রিয়া নোভোস্তি সংবাদ সংস্থাকে উদ্ধৃত করে পুতিন জানান, ২০২২ সাল থেকে সরকারের সক্রিয় সহায়তায় প্রতিরক্ষা শিল্প দ্রুত প্রযুক্তিগত অগ্রগতি অর্জন করেছে। এর ফলে অত্যন্ত চাহিদাসম্পন্ন অস্ত্র ও সরঞ্জামের উৎপাদন উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।
তিনি বলেন, সাঁজোয়া যুদ্ধযান ও সাঁজোয়া জনবাহী যান (বিএমপি ও এপিসি) ৩.৭ গুণ, ইলেকট্রনিক যুদ্ধ সরঞ্জাম ১২.৫ গুণ এবং রকেট আর্টিলারি অস্ত্র ৯.৬ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এটি মূলত প্রতিরক্ষা শিল্পের সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফলাফল, যা দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি ও স্থিতিশীলতার ওপর নির্ভর করে সফলতা অর্জন সম্ভব হয়েছে।
পুতিন আরও জানান, যুদ্ধের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে সামরিক-শিল্প কমপ্লেক্সের নতুন কাঠামো তৈরি করা হচ্ছে। তিনি মন্তব্য করেন, যুদ্ধের প্রকৃতি ও কৌশল পরিবর্তিত হওয়ায় নতুন পরিকল্পনা ও উন্নয়ন অব্যাহত রয়েছে। ভবিষ্যতের লক্ষ্য হলো উৎপাদন খরচ কমানো, অস্ত্র পরীক্ষাগার ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের উন্নয়ন এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহারে জোর দেওয়া।
পুতিন বলেন, অস্ত্রখাতে মোট ব্যয়ের অর্ধেকই এখন উচ্চ অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত প্রযুক্তি ও ব্যবস্থাগুলোর পিছনে ব্যয় হচ্ছে, যা ভবিষ্যতের সশস্ত্র বাহিনীকে আধুনিক, শক্তিশালী ও স্বয়ংসম্পূর্ণ করে তুলবে। এর মধ্যে রয়েছে কৌশলগত পারমাণবিক বাহিনী, মহাকাশ সম্পদ, আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ও যোগাযোগ ব্যবস্থা।
অন্তর্বর্তী সময়ে, রিয়া নোভোস্তি জানিয়েছে, ২০২৭ থেকে ২০৩৬ সাল পর্যন্ত রাশিয়ার অস্ত্র উৎপাদন কর্মসূচির পরিকল্পনায় ভবিষ্যতের যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতিযুক্ত সক্ষমতা অনুযায়ী লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এই পরিকল্পনা, যেখানে নির্দিষ্ট সংখ্যক অস্ত্রের চেয়ে গুরুত্ব দেয়া হয় ভবিষ্যতের চাহিদা ও সক্ষমতা, গত ১৭ ডিসেম্বর প্রতিরক্ষামন্ত্রী আন্দ্রেই বেলাউসেপ উপস্থাপন করেন।






