বেগম খালেদা জিয়া, তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন, আজীবন দেশের মানুষের জমি করে রাখা নেতা, তাঁর শেষризের সঙ্গী হন। তাঁর জানাজার আনুষ্ঠানিকতা শেষে মরদেহ এখন রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের জিয়া উদ্যানে পৌঁছেছে। বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) বিকেল সোয়া ৪টার দিকে শোকপূর্ণ পরিবেশের মধ্যে তাঁর মরদেহবাহী গাড়ি জিয়া উদ্যানে প্রবেশ করে। সেখানে সম্পন্ন হচ্ছে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় স্বামী ও মুক্তিযুদ্ধের নেতা, সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরের পাশে তাঁকে সমাহিত করার প্রক্রিয়া। মরদেহটি ফ্রিজার ভ্যান থেকে নামানোর পর বিশেষ সামরিক ও দলীয় প্রটোকলে তা সমাধি চত্বরে নেওয়া হয়। এ সময় পরিবারের সদস্যরা, তাদের মধ্যে দুই পুত্রবধূ, নাতনিসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে, বিকেল ৩টার দিকে রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে এক বিশাল ও ইতিহাসের অংশ এই জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা লাখো মানুষের অংশগ্রহণে পুরো এলাকা কাপছে শোকে। জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের খতিব মুফতি আবদুল মালেকের ইমামতিতে সম্পন্ন এই জানাজায় উপস্থিত ছিলেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী, প্রধান বিচারপতি, তিন বাহিনী প্রধান ও বিভিন্ন দফতরের শীর্ষ কর্মকর্তারা। এছাড়া, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, চীন, ভারত, কাতারসহ অন্তত ৩২টি দেশের রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিকগণ অংশ নেন, মান্য করে শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন। জানাজা শুরুর আগে বড় ছেলে তারেক রহমান মো δω আসম কবরের জন্য দোয়া ও আল্লার রহমত কামনা করেন।
আজকের এই শেষ বিদায়ের নৈশভোজের সূচনা হয় সকালে, গুলশানের বাসভবন থেকে। সকাল ১১টা ৪৮ মিনিটে লালসবুজ পতাকায় মোড়ানো মরদেহ একটি ফ্রিজার ভ্যানে করে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় আনা হয়। এর আগে, গতকাল মঙ্গলবার ভোর ৬টায়, রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৭৯ বা (মতান্তরে ৮০) বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। দীর্ঘ সময় ধরে লিভার সিরোসিস, হৃদরোগ, ফুসফুস ও কিডনির জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি। তাঁর শেষ দিনগুলো কঠিন আর অসহ্য ব্যথায় কেটেছে। এই নেত্রী জনতার কাছে এক আদর্শ, স্বাধীনতা সংগ্রামের অমিত ব্যবস্থাপক, দুর্ব্যবহৃত নেতা, যার জীবন সংগ্রাম ছিল এক বিরামহীন সংগ্রাম। মৃত্যুর পর আজ দেশজুড়ে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয় এবং তিন দিনের শোকের অন্ধকারে সবাই শোকভার। তার রাজনৈতিক জীবনের শেষ অধ্যায় এভাবেই লেখা হয়, যেখানে প্রিয়জনের পাশে চিরস্থায়ী ঠিকানায় শায়িত হচ্ছেন। নিরাপত্তা বাহিনী চৌকস অবস্থানে, শোকের নীরবতা এবং সংবেদনশীল পরিবেশে শেরেবাংলা নগর ক’টেজে শান্তিপূর্ণভাবে চলতি প্রক্রিয়া শেষ হচ্ছে।






