জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সম্প্রতি ব্রুনাইয়ে তিন দিনের সফর নিয়ে শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ উদ্বেগের বিষয়। এদেশে অতীতে আমরা নিজেরাই সন্ত্রাসের শিকার হয়েছি। জঙ্গিবাদের ঘটনাও ঘটেছে। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের এখনও ঝুঁকি আছে, কিন্তু সরকার যথেষ্ট সজাগ।’ সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জনমত সৃষ্টি করে তা প্রতিরোধে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যের শুরুতেই শ্রীলঙ্কায় সিরিজ বোমা হামলায় নিহতদের স্মরণ করে তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন প্রধানমন্ত্রী। সম্প্রতি নিউজিল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কায় সংঘটিত সন্ত্রাসের ঘটনা উল্লেখ করে এক সাংবাদিক এদেশেও এমন ঝুঁকি আছে কিনা জানতে চান। তখন প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নিউজিল্যান্ডের মতো শান্তিপূর্ণ দেশে যখন এ ধরনের জঙ্গিবাদী ঘটনা ঘটাতে পারে, আর বাংলাদেশে তো সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ লেগেই আছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘পঁচাত্তরে যেভাবে জাতির পিতাকে হত্যা করা হয় এবং ৩ নভেম্বর জেলখানায় হত্যা, এগুলো তো সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের পর্যায়ে পড়ে। যখন থেকে মিলিটারি ডিক্টেটররা ছিল তখন থেকে অনবরত ক্যু হতো, মানুষ হত্যা হতো। ২০০১ সালের নির্বাচনের পর কীভাবে মানুষের ওপর অত্যাচার হয়েছে। তারপর ২০১৩ সালের শেষের দিকে অগ্নিসন্ত্রাস। ২০১৪ ও ২০১৫ সালেও একই কায়দায় মানুষ হত্যা। সব থেকে বড় কথা— প্রকাশ্য দিবালোকে গ্রেনেড হামলা করে মানুষ হত্যা করা। যে গ্রেনেড ব্যবহার করা হয় যুদ্ধে, ২০০৪ সালে ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসবিরোধী র্যালিতে সিই গ্রেনেড ব্যবহার করা হলো। আমরা সেই সন্ত্রাসের শিকার। ১৫ আগস্ট সব হারালাম আমরা।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াতের অগ্নিসন্ত্রাসে ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করা হলো। নুসরাতকেও অগ্নিসন্ত্রাসের শিকার হতে হলো। তারই শিক্ষক তাকে আগুন দিয়ে পোড়ানোর ব্যবস্থা করলো। কাজেই সন্ত্রাসের ঝুঁকি আছে। তবে, সরকার যথেষ্ঠ সজাগ আছে। গোয়েন্দা সংস্থাগুলো কাজ করছে।’
উল্লেখ্য, গত ২১ এপ্রিল ব্রুনাই যান প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীরা। তিন দিনের সরকারি সফর শেষে ২৩ এপ্রিল সন্ধ্যায় দেশে ফেরেন তিনি।