সাফ অনূর্ধ্ব-১৭ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশ দল ভারতের মুখোমুখি হয়। আজ থিম্পুর চাংলিমিথাং স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে বাংলাদেশের মেয়েরা ২-০ গোলে হেরে যায়। প্রথমার্ধে বাংলাদেশের জন্য খারাপ খবর ছিলো, যখন আলপি-অর্পিতারা একাই একে গোল করে ভারতের সামনে এগিয়ে দেন। দ্বিতীয়ার্ধে বাংলাদেশ কিছু সময় চেষ্টা চালিয়ে যাওয়ায় ম্যাচে ফিরে আসার আপ্রাণ চেষ্টা করে, কিন্তু বেশির ভাগ সময়েই ভারতের আক্রমণ রুখে দেয়। শেষ পর্যন্ত, তারা আরও একবার শেষ শক্তি দেখিয়ে ভারতের এরিক লুকেসের মতো খেলোয়াড়ের গোলের মাধ্যমে স্কোরলাইন ২-০ করেন।
আগের দিন বাংলাদেশ দলের সহকারী কোচ আবুল হোসেন বলেছিলেন, ভারতের সঙ্গে ভুল করতে চায় না বাংলাদেশ। কিন্তু মাঠে সেই ভুলই হলো, যা পুরো ম্যাচের ফলাফলে প্রভাব ফেলেছে। কোচ মাহবুবুর রহমানের কৌশলও সমালোচনার মুখে পড়েছে কারণ ভারতের মতো দারুণ ছন্দে থাকা দলের বিরুদ্ধে হাইলাইন ডিফেন্স দাঁড় করানো বেশ কঠিন হয়েছিলো। এই ফলের কারণে বাংলাদেশের অনূর্ধ্ব-১৭ মেয়েদের জয়যাত্রা পাঁচ ম্যাচের জন্য বন্ধ হয়ে গেল। পেছনের কিছুদিনে বাংলাদেশ হেরেছিল অস্ট্রেলিয়ার কাছে ৪-০ গোলে, যা এই দলের জন্য বিরাট এক ধাক্কা।
প্রায় এক বছর আগে, ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশের মেয়েরা শেষবার হারেছিল, যখন তারা অস্ট্রেলিয়ার কাছে ৪-০ গোলে হেরেছে। এর আগে, ২০২৪ সালে সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ পর্যায়ে ভারতের বিপক্ষে জিতেছিল বাংলাদেশ। গ্রুপ পর্বে ৩-১ গোলে জয় এবং ফাইনালে টাইব্রেকারে জিতেছিল দলটি।
আজকের ম্যাচের প্রথমদিকে, মাত্র ১৪ মিনিটেই বাংলাদেশ গোল হজম করে। ভারতের এক ফুটবলার মাঝমাঠ থেকে বল দখল করে চলে যান এবং তিনজন বাংলাদেশি খেলোয়াড়কে ড্রিবল করে ডি-বক্সের সামনে পাস দেন। সেই পাস ধরে ভারতের পার্ল ফার্নান্দেস দুর্দান্ত এক শটে বল জালে পাঠান। বাংলাদেশের গোলকিপার ইয়ারজান বেগম চেষ্টা করেছিলেন বল রুখতে, তবে পারেননি।
গোল হজমের পর বাংলাদেশ দলেরুণই লড়ে যায় ম্যাচে ফিরে আসার জন্য। তারা বেশ কিছু ভালো আক্রমণ তৈরি করে। ৩৬ মিনিটে ফতেমা আক্তার কর্নার থেকে মাথা নেড়ে লক্ষ্যভরা শট নিলেও সফল হতে পারে নি। বিরতির কিছুটা পরে, আবারও একটি আক্রমণে বিপদ বাড়ে। ভারতের বনিপিলা শুলাই ৭৬ মিনিটে নিখুঁত ভলি করে বাংলাদেশের জালে দ্বিতীয় গোল করে।
উল্লেখ্য, এর আগে ভারতের দল এই টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত পারফর্ম করেছে। তারা নেপালকে ৭-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে শুরু করে এবং বাংলাদেশের মুখোমুখি হয় প্রথম ম্যাচে যেখানে ভুটানকে ৩-১ গোলে হারিয়েছে। এর ফলে, দুই জয়ে ভারতের পয়েন্ট ৬।
বাংলাদেশের পরবর্তী ম্যাচগুলো হচ্ছে ২৪ ও ২৭ আগস্ট নেপালের সঙ্গে এবং ২৯ আগস্ট ভুটানের বিরুদ্ধে। টুর্নামেন্টের শেষ ম্যাচ হবে ৩১ আগস্ট, যেখানে তারা আবার ভারতের মুখোমুখি হবে। এই চার দেশের টুর্নামেন্ট ডাবল লিগ পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সবচেয়ে বেশি পয়েন্ট অর্জনকারী দল হবে চ্যাম্পিয়ন। পয়েন্ট সমান হলে মুখোমুখি লড়াই এবং গোলপার্থক্য নির্ণায়ক হবে।