কাতারে ইসরায়েলি হামলা এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের রাশিয়ান তেল বিক্রেতাদের ওপর শুল্ক আরোপের আহ্বান জানানোর পর বুধবার বিশ্ববাজারে তেলের দাম বৃদ্ধি পায়। তবে, বাজারের সামগ্রিক পরিস্থিতি ও দুর্বল চাহিদার কারণে এই বৃদ্ধির হার খুব বেশি ছিল না। বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এদিন ব্রেন্ট ক্রুডের দাম প্রতি ব্যারেল ৬১ সেন্ট বা ০.৯২ শতাংশ করে বৃদ্ধি পেয়ে ৬৭ ডলারে পৌঁছায়। একই সময়ে মার্কিন ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (WTI) ক্রুড তেলের দর ৬১ সেন্ট বা ০.৯৭ শতাংশ বেড়ে ৬৩.২৪ ডলারে পৌঁছায়।
ওএএনডিএ-এর সিনিয়র বাজার বিশ্লেষক কেলভিন ওং মনে করেন, কাতারে ইসরায়েলের ইতিহাসে প্রথম বারের মতো বড় ধরনের হামলার কারণে মধ্যপ্রাচ্যে তেল সরবরাহের বিষয়ে নতুন এক উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। যদি ওপেকপ্লাসের সদস্য দেশের তেল উৎপাদন ও সংরক্ষণ কেন্দ্রগুলোকেও লক্ষ্য করে এই হামলা হয়, তাহলে স্বল্পমেয়াদে তেল সরবরাহে বড় ধরনের সংকট দেখা দিতে পারে।
এই হামলার দাবি করে ইসরায়েল জানিয়েছে, তারা হামাসের নেতাকেন্দ্রগুলো লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। কাতারের প্রধানমন্ত্রীর মতে, এই হামলা শান্তি আলোচনার জন্য বড় হুমকি সৃষ্টি করেছে।
হামলার পরে বাজারে প্রথমে তেলের দাম প্রায় ২ শতাংশ বৃদ্ধি পায়, তবে পরে ওয়াশিংটন দোহাকে আশ্বস্ত করে যে এ ধরনের ঘটনা আর ঘটবে না এবং সরবরাহে তাত্ক্ষণিক কোনও বিঘ্ন ঘটছে না। ফলে, তেলের মূল্যবৃদ্ধির গতি স্থিতিশীল অবস্থায় ফিরে আসে।
অন্যদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, যেন তারা চীন ও ভারতের ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে। তার মূল লক্ষ্য হলো প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের অর্থনৈতিক শক্তিতে চাপ সৃষ্টি করা।
চীন ও ভারত রাশিয়ার প্রধান তেল ক্রেতা দেশ হিসেবে পরিচিত। ২০২২ সালে ইউক্রেনে আগ্রাসনের পর থেকে, মার্কিন নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও, এই দু’টি দেশ রাশিয়ার অর্থনীতিকে সচল রাখতে সহায়তা করে আসছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, যদি এই বড় ক্রেতাদের ওপর শুল্ক আরোপ করা হয়, তবে তা রুশ তেলের রপ্তানিতে বিঘ্ন সৃষ্টি করতে পারে। এর ফলে বিশ্ববাজারে তেলের সরবরাহ সংকুচিত হয়ে দাম আরও বৃদ্ধির সম্ভাবনা দেখা দিতে পারে।