ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি তাসকীন আহমেদ বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের দক্ষতা ও প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বৃদ্ধিতে চীনের সহযোগিতা কামনা করেছেন। তিনি সোমবার ঢাকায় চীনা দূতাবাসে চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েনের সঙ্গে অনুষ্ঠিত দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য আলোচনায় এ কথা বলেন।
বৈঠক চলাকালে তাসকীন আহমেদ বলেন, ২০২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ১৭.৩৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। যার মধ্যে বাংলাদেশের আমদানির পরিমাণ ১৬.৬৪ বিলিয়ন এবং রপ্তানির পরিমাণ ৭১৫.৩৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের টেকসই সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে এবং এলডিসি থেকে উত্তরণে সক্ষমতা অর্জনে দুই দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
ডিসিসিআই সভাপতি বলেছিলেন, বাংলাদেশের জন্য চীনা দেশটি সবথেকে বড় আমদানিকারক। চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের রয়েছে বহুমাত্রিক সম্পর্ক, যার মধ্যে অবকাঠামো উন্নয়ন, জ্বালানি এবং বিদ্যুৎ, শিক্ষা ও মানবসম্পদ উন্নয়নসহ অন্যান্য খাতগুলো অন্তর্ভুক্ত। এর পাশাপাশি কৃষি, খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, তথ্যপ্রযুক্তি, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, অটোমোবাইল, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং, পাদুকা, লজিস্টিকস, চিকিৎসা সরঞ্জাম ও স্বাস্থ্যসেবা, এপিআই, সেমিকন্ডাক্টর এবং জাহাজ নির্মাণসহ বিভিন্ন খাতে চীনের সার্বিক সহায়তা চেয়েছেন তিনি।
তাসকীন আহমেদ আরও উল্লেখ করেন, বৈশ্বিক বাণিজ্যিক প্রতিযোগিতায় टिकতে বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের দক্ষতা ও প্রযুক্তিগত সক্ষমতা উন্নত করা প্রয়োজন। চীন এই ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ সহায়তা দিতে প্রস্তুত।
চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত চীনা ২০টিরও বেশি নতুন প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের তৈরি পোশাক ও টেক্সটাইল খাতে প্রায় ৮০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের অঙ্গীকার করেছে। এই বিনিয়োগ বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশের রপ্তানি আরও বাড়বে।
তিনি আরও জানান, চীনা উদ্যোক্তারা বিশেষ করে বিদ্যুৎ চালিত যানবাহন (ইলেকট্রনিক ভেহিকেল) খাতে বিনিয়োগের আগ্রহ পোষণ করছেন, তবে উচ্চ শুল্ক এবং সহায়ক নীতিমালা না থাকায় এতে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, বাংলাদেশ সরকার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে গ্রহণ করে প্রয়োজনীয় নীতিমালা উন্নয়নের উদ্যোগ নেবে।
রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, বাংলাদেশের মোট রপ্তানির ৮৫ শতাংশই আসে তৈরি পোশাক খাত থেকে, যা দীর্ঘমেয়াদে টেকসই নয়। অতএব, বাংলাদেশকে অন্যান্য সম্ভাবনাময় খাতে রপ্তানি নেতৃত্বের কৌশল অবলম্বন করে পণ্যের বহুমুখীকরণ ও সক্ষমতা বাড়াতে হবে।
অবশেষে তিনি বাংলাদেশের উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধিতে চীনের প্রযুক্তিগত সহায়তা গ্রহণের ওপর জোর দেন।