রূপগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দারা দিন দিন কুকুরের আতঙ্কে ভূগছেন। দিনে তারা জলাতঙ্কের ভয়ে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের নজরে আসে, তবে আতঙ্কের পাশাপাশি সন্ধ্যার পর শিয়ালের উপদ্রবও বাড়ছে। আশেপাশের গ্রামগুলোতে কুকুরের অত্যাচার ও শিয়ালের হামলার ঘটনা প্রতিদিনই ঘটছে, যা সাধারণ মানুষের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলছে।
ফজরের নামাজের পর থেকে শুরু হয় তাদের দুর্ভোগ। কাজী আবুল হোসেন জানিয়েছেন, সকালে হাটতে গেলে শিয়ালের কারণে কোথাও যেতেই পারেন না। একটু নিরিবিলি জায়গা পেলে দলবেঁধে তারা এসে কামড় দেয়ার চেষ্টায় লেগে থাকে। শুক্রবার ভোরে জলসিঁড়ির বালুতে হাটতে গিয়ে একদল শিয়াল আক্রমণ করে, যার ফলে প্রাণপণ দৌড়ে রক্ষা পান তিনি। মহসিন মিয়া বলেন, রাতে তার খামারে শিয়ালের একটি দল প্রবেশ করে ও চারটি ছাগলকে কামড়ে হত্যা করে, ফলে তাঁর লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে। দিনে কুকুরের কামড়ে ও রাতে শিয়ালের হামলার আতঙ্কে তিনি ও অন্যান্য গ্রামবাসী বেশ চিন্তিত।
বিভিন্ন গ্রামবাসী জানান, কেওডালা, তালাশকুট, খামারপাড়া, নগরপাড়া, কামসাইর, দেইলপাড়া, বাঘবাড়ি এবং পিরুলিয়া সহ বেশ কিছু এলাকায় শিয়াল ও কুকুরের উপদ্রব আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে গেছে। এ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হলেও, আতঙ্ক রয়ে গেছে।
উপজেলার স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ডাঃ আইভী ফেরদৌস বলেন, শিয়াল ও কুকুরের কামড়ে রোগীদের আসে। আমরা যথাসাধ্য চিকিৎসা দিচ্ছি, তবে ওষুধের স্বল্পতা থাকায় সমস্যা হচ্ছে। এদিকে, প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সজল কুমার দাস জানিয়েছেন, ভাদ্র মাসে কুকুরের উপদ্রব আরও বেশি হয় এবং শিয়ালের সংখ্যাও বাড়ছে। তাই তাদের মধ্যে বেশ কয়েকটি কুকুরকে ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে। নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জয় বলেছেন, শিয়াল ও কুকুরের উপদ্রব বাড়ছে যা আতঙ্কের কারণ। শিশুদের মধ্যে বেশি ভয় দেখা দেয়, তাই মানুষের সচেতনতায় গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। তিনি আরও আশ্বাস দেন, বিষয়টি নিয়ে আলোচনা ও সমাধানে পদক্ষেপ নেয়া হবে।
নগর ও পাড়া এলাকাগুলোতে কুকুরের সংখ্যা বেশি থাকলেও, শিয়ালের উপস্থিতি পুরোপুরি কম নয়। সাধারণ মানুষের জীবন জীবিকা ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে অনেকটাই। এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় সবাইকে সচেতন ও আগাম প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।