অভিনেত্রী জাহ্নবী কাপুর আবারও দর্শকদের মন কেড়ে নিতে প্রস্তুত নতুন এক রোমান্টিক কমেডি ছবি দিয়ে। শশাঙ্ক খৈতানের পরিচালনায় নতুন এই ছবির নাম ‘সানি সংস্কারী কি তুলসী কুমারী’। কিছুদিন আগে মুক্তি পেয়েছিল তার রোমান্টিক-কমেডি ছবি ‘পরম সুন্দরী’, যেখানে তার পাশে ছিলেন বলিউডের তরুণ তারকা সিদ্ধার্থ মালহোত্রা। এবার এই নতুন ছবিতে তার সঙ্গে জুটি বাঁধছেন অভিনেতা বরুণ ধাওয়ান। সম্প্রতি এর ট্রেলার প্রকাশের সময় জাহ্নবী জানিয়েছেন, ভবিষ্যতের জীবনসঙ্গীকে তিনি কোন গুণগুলো দেখে চান।
‘পরম সুন্দরী’ ছবির ‘সুন্দরী’ চরিত্রের মাধ্যমে তরুণ দর্শকের মন জয় করেছিলেন জাহ্নবী। এবার তিনি নিজেকে ‘তুলসী কুমারী’ চরিত্রে তুলে ধরছেন এই নতুন ছবিতে, যা দর্শকদের আবারো মাতিয়ে তুলবে। ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন ছবিতে তাকে বিয়ের আসরে দেখা গেলেও, তার ব্যক্তিগত জীবনে এখনও পর্যন্ত রাষ্ট্রীয়ভাবে বিয়ের ঘোষণা দেয়নি।
মিষ্টি হাসিতে জাহ্নবী বললেন, ‘‘আমি এখন শুধুই সিনেমা কেন্দ্রীক পরিকল্পনা করে চলছি। কি ধরনের ছবি করব, সেটাই আমি ভাবছি। বিয়ের ব্যাপারে আমার এখনো কোনও পরিকল্পনা নেই, কারণ আমার এখন অনেক কাজের পরিকল্পনা রয়েছে।’’’
বিষয়টি নিয়ে যখন তার ভবিষ্যতের জীবনসঙ্গীকে কী গুণগুলো দেখে চান, এমন প্রশ্ন করা হয়, তখন জাহ্নবী বলেন, ‘‘আমি চাই, তিনি সুশিক্ষিত, ভদ্র, মার্জিত হন। আর সবচেয়ে জরুরি হল, তার হাস্যরসের অনুভূতি খুব ভালো থাকা দরকার।’’
অন্যদিকে, বেশ কিছুদিন ধরেই বলিউডে জাহ্নবীর সঙ্গে শিল্পপতি ও পোলো খেলোয়াড় শিখর পাহাড়িয়ার সম্পর্ক নিয়ে গুঞ্জন চলছে। একসঙ্গে বিভিন্ন স্থানে দেখাও হয়েছে তাদের, ভক্তদের মধ্যে নানা ধরণের আলোচনা ও কৌতূহল সৃষ্টি হয়েছে। তবে, তারা কেউই এই সম্পর্ক নিয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলেননি। এমনকি বিভিন্ন মহল থেকে শোনা যায়, তারা বিয়ের সিদ্ধান্ত নিতে পারেন এ বছর শেষের দিকে। তবে, ‘সানি সংস্কারী কি তুলসী কুমারী’ ছবির ট্রেলার প্রকাশ অনুষ্ঠানে জাহ্নবী স্পষ্ট করেই জানিয়ে দেন, তার বিয়ের পরিকল্পনা এখনো appears না।
তিনি বলেন, ‘‘আমি এখন অনেক কিছু উপভোগ করছি, জীবনে আরও অনেক কিছু করা বাকি। অভিনয়, নতুন চরিত্র ও প্রজেক্টের কাজ নিয়ে দিন কাটছে।’’ অর্থাৎ, তিনি স্পষ্ট করলেন যে, বিয়ের গুজব এখনো কেবল গুঞ্জন। তার মূল লক্ষ্য এখন শুধু ভালো ছবি তৈরি করে দর্শকের মনে যাক। তার মতে, একজন শিল্পীর আসল পরিচয় তার কাজের মধ্যেই থাকে। ব্যক্তিগত জীবনের ছোটখাটো বিষয় নিয়ে বেশি আলোচনা তিনি পছন্দ করেন না। বরং তিনি চান, দর্শক তার অভিনয় দিয়ে তাকে চিনুক এবং স্মরণ করুন।
অভিনেত্রী এই অনুষ্ঠানে সাম্প্রতিক সময়ের আলোচিত ইস্যু ‘এআই’ প্রযুক্তি বিষয়ে মন্তব্য করে বললেন, ‘‘এটা কেবল শিল্পীদের জন্য নয়, প্রযুক্তিবিদ ও সৃষ্টিশীল মানুষের জন্যও সতর্কতার বিষয়। আমি দেখেছি, এআইয়ের সাহায্যে এখন অনেক কিছুই দ্রুত তৈরি হতে পারে। আগে চরিত্রের পোশাক-পরিচ্ছদ তৈরি খুব সময় নিত, এখন এআই সেই কাজ অনেক দ্রুত করে দেয়। তবে, আমি মনে করি, সৃজনশীল মানুষদের কাজের সুরক্ষা খুব গুরুত্বপূর্ণ।’’
প্রসঙ্গত, এই ট্রেলার ও ছবি মুক্তি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বরুণ ধাওয়ান, রোহিত সরাফ, মনীশ পাল। তবে নায়িকা সানিয়া মালহোত্রা উপস্থিত থাকতে পারেননি। আবার, এআই প্রযুক্তির অপব্যবহার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বরুণও। তিনি বলেছেন, ‘‘প্রযুক্তি সঠিকভাবে ব্যবহার করতে হবে এবং শিল্পীদের সুরক্ষার জন্য অবশ্যই নিয়ম-কানুন প্রণয়ন জরুরি।’’
‘সানি সংস্কারী কি তুলসী কুমারী’ ছবিটি মুক্তি পাবে আগামী ২ অক্টোবর, দশেরার দিন। এই উৎসবের মুহূর্তে দর্শকদের জন্য নতুন রঙ ও নতুন অভিজ্ঞতা নিয়ে আসে এই ছবি বলে প্রত্যাশা ভক্তদের। ট্রেলারে দেখা যায়, মূল গল্পটি হচ্ছে ‘প্রাক্তনের যুদ্ধ’—বরুণ ও জাহ্নবী অভিনয় করেছেন এমন এক জুটির চরিত্রে, যারা শুধু তাদের প্রাক্তন প্রেমের ছদ্মবেশে অভিনয় করছে। তবে এই ‘নকল প্রেম’ তাদের মাঝে নতুন করে প্রেমের সূত্রপাত, হিংসা, দ্বন্দ্ব আর মজার কাণ্ডের জন্ম দেয়।
প্রথম পোস্টারটি গত জুলাইয়ে প্রথম প্রকাশিত হয়, যেখানে দেখা যায় বরুণের দুষ্টুমির মুচকি হাসি এবং তার মুখে ছিল এক অদ্ভুত রহস্যময় অভিব্যক্তি, সঙ্গে ছিল এক কবিতা, যা চরিত্রটির গভীর ভাবনা প্রকাশ করে। সেই কবিতাটি ছিল:
“এই অশ্রুগুলো আমার… সমুদ্রের জল নয়… এই অশ্রুগুলো আমার… বৃষ্টি বা ভরসা নেই… আজ আছে, কাল নেই!” আর এই ছোট কবিতাই বুঝিয়েছিল, ‘সানি সংস্কারী’ চরিত্রটি আবেগপ্রবণ, কিন্তু রোম্যান্টিক। হাসে ও ভালোবাসে, কিন্তু ভেতরে জমা থাকে এক বিষণ্ণতা। পরিচালক শশাঙ্ক খৈতান এই ছবির মাধ্যমে দর্শকদের জানিয়ে দিয়েছেন—এটি শুধু প্রেমের গল্প নয়, বরং জীবনের রঙিন আবেগের এক মনস্তাত্ত্বিক রোলার কোস্টার।
এই ছবিতে আবারও দেখা যাবে বরুণ ধাওয়ান ও জাহ্নবী কাপুরের জুটি, যাদের শেষবার বড় পর্দায় দেখা গেল ২০২৩ সালে ‘বাওয়াল’ ছবিতে। তখনই দর্শক তাদের কেমিস্ট্রি দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন। এখন, নতুন গল্প ও নতুন ছকে ফিরে এসেছেন তারা।
