গুয়াহাটির বর্ষাপাড়া স্টেডিয়ামে নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপের প্রথম হতাশাজনক সূচনায় ইংল্যান্ডের কাছে ১০ উইকেটে হেরে গেল দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে, সেই প্রতিশোধের ম্যাচটি সেমিফাইনালে হয়েছে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। বুধবারের এই ম্যাচে, দক্ষিণ আফ্রিকা নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের ফাইনালে পা রাখার স্বপ্ন সফল করেছে, ইংল্যান্ডকে ১২৫ রানে উড়িয়ে দিয়ে। এই জয়ে দলের অধিনায়ক লরা উলভার্টের অসাধারণ ১৬৯ রানের ইনিংস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
গুয়াহাটিতে টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নামা দক্ষিণ আফ্রিকা ৭ উইকেটে ৩১৯ রান সংগ্রহ করে। এর পর বল হাতে ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানরা ব্যর্থ হয়ে ৪২.৩ ওভারেই ১৯৪ রানে গুটিয়ে যায়। উল্লেখ্য, এর আগে গত দুই আসরে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সেমিফাইনালে হেরে পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছিল। চলমান আসরে প্রথম পর্বে তারা সিভার-ব্রান্টের দলের কাছে মাত্র ৬৯ রানে হারতে হয়েছিল। এই মলিন পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতা ২০০০, ২০১৭ এবং ২০২২ সালের সেমিতে বিদায়ের মাধ্যমে দেখা যায়। এবার তারা ২ নভেম্বরের ফাইনালে ভারত বা অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হবে।
প্রথমে ব্যাটিংয়ে নামা দলটির নেতৃত্ব দেন অধিনায়ক লরা উলভার্ট। তিনি ১৬৯ রানের এক দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন, যেখানে তিনি ২০টি চার ও ৪টি ছক্কা মারেন। এটাই বিশ্বকাপের নকআউট পর্বে কোনো অধিনায়কের প্রথম সেঞ্চুরি, একইসাথে এটি দক্ষিণ আফ্রিকার খেলোয়াড় হিসেবে সর্বোচ্চ ও দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ইনিংস। ওপেনিংয়ে তার সাথে তাজমিন ব্রিটস ১১৬ রানের জুটি গড়েন। দলের ১১৯ রানে আরও দুই উইকেট পড়ার পর, ৪৫ রানে তাঁকে বিদায় করতে সক্ষম হন ব্রিটস। এরপর আনিকা বশ আউট হন সোফি এক্লেস্টনের ২৩তম ওভারে, এবং ইংল্যান্ডের অধিনায়ক সিভার-ব্রান্ট দ্রুতই লুসকে ফেরান।
উলভার্ট ও মারিজান কাপের জুটিতে ৭২ রানের ভিত্তি তৈরি হয়। ৫২ বলে ফিফটি স্পর্শ করে ১১৫ বলে ১০০ করে চালিয়ে যান উলভার্ট, যার জন্য তিনি দ্রুততম পাঁচ হাজার রানের রেকর্ড করেন। ইনিংসের শেষদিকে ঝড়ো ব্যাটিং চালিয়ে দেড়শ’ও পার করেন তিনি। শেষদিকে ক্লোয়ে ট্রিয়ন ও নাদিন ডি ক্লার্কের ১২ বলে ২৮ রানের অপরাজিত জুটিতে দলটির পুঁজি আরও বেশি হয়। ইংল্যান্ডের হয়ে ১০ ওভারে ৪৪ রান দিয়ে ৪ উইকেট নিয়েছেন এক্লেস্টন।
অন্যদিকে, রান তাড়ার শুরুতেই ধস নামে ইংল্যান্ডের ব্যাটিং লাইনে। প্রথম ওভারেই কাপ অ্যামি জোনস ও হিদার নাইটকে ফেরান। দ্বিতীয় ওভারে খাকা আউট করেন ট্যামি বেমন্টকে। তবে, সিভার-ব্রান্ট ও ক্যাপসির মধ্যে ১০৫ রানের জুটিতে কিছুটা আশা দেখলেও, এরপর আবার ধস নামে। মাঝে ড্যানি ওয়াইট-হজ ও লিনসে স্মিথ কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে তোলেন, তবে তাদের কোনও লাভ হয়নি। দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে পাঁচ উইকেট শিকার করেন কাপ। এই জয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপের ফাইনালে পৌঁছানোর ইতিহাস সৃষ্টি করেছে, যা তাদের জন্য নতুন এক অধ্যায়।
	    	





