চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমোরিং কনটেইনার টার্মিনালসহ তিনটি গুরুত্বপূর্ণ টার্মিনাল বিদেশি কোম্পানির ইজারা দেওয়ার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ব্যস্ত হয়ে উঠেছে বন্দর শ্রমিক ও কর্মচারীরা। তারা সরকারের এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার জন্য একযোগে আহ্বান জানাচ্ছেন, অন্যথায় কঠোর কর্মসূচি গ্রহণের হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন। শনিবার এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয় নগরীর প্রেসক্লাবের সামনে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যে নিউমোরিং কনটেইনার টার্মিনালটি বিদেশি সংস্থা ডি পি ওয়ার্ল্ডের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। পাশাপাশি লালদিয়ার চরে নতুন টার্মিনাল নির্মাণ ও ব্যবস্থাপনার জন্য ডেনিশ কোম্পানি এপি মোলার বা এপিএম নামের প্রতিষ্ঠানকে নির্বাচিত করা হচ্ছে। বর্তমানে নিউমোরিং টার্মিনালটি চালু রয়েছে, এবং এই সিদ্ধান্তের ফলে দেশের বন্দর ব্যবস্থাপনায় সতর্কতা বাড়ছে।
সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে আন্দোলন চালিয়ে আসছে বন্দর শ্রমিক ও কর্মচারী সংগঠনগুলো। তারা দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন আন্দোলনের মাধ্যমে এই ইজারার বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন। তবে এবার ব্যতিক্রমী অবস্থানে এসে গণঅনশনে নেমে প্রতিবাদ জানিয়েছেন তারা। এ কর্মসূচি পালন করা হয় প্রেসক্লাবের আশপাশে, যেখানে বিভিন্ন সংগঠন যেমন জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন, বাম মোর্চাসহ অন্যান্যরা একাত্মতা ব্যক্ত করেছেন।
জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি এস কে খোদা তোতন বলেছেন, ‘বন্দরের লাভজনক টার্মিনালগুলো যদি বিদেশি কোম্পানির হাতে তুলে দেওয়া হয়, তাহলে দেশের বন্দর ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’ তিনি আরো বলেন, শ্রমিক সংগঠনগুলো দীর্ঘদিন ধরে এই ইজারা বাতিলের জন্য আন্দোলন চালিয়ে আসলেও, সরকার মূল সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেনি। বরং, ইজারা প্রক্রিয়া দ্রুত চূড়ান্ত করার চেষ্টা করছে, যা আন্দোলনকারীদের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
এদিকে, শ্রমিক নেতারা উল্লেখ করেন, বিদেশি তত্ত্বাবধানে বন্দর চালানো হলে দেশের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়বে এবং এ নিয়ে তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বৃহৎ আন্দোলনের কথা ভাবছেন। কাজী শেখ নুরুল্লাহ বাহার বলেন, ‘বিদেশিদের হাতে দিয়ে বন্দরকে অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা ঝুঁকিতে ফেলার প্রশ্নে আমরা আপস করব না।’ শ্রমিক সংগঠনরা এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করে ভবিষ্যতেও সংঘর্ষের আশঙ্কাও প্রকাশ করেছেন।






