বাংলাদেশ পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম বলেছেন, কোনো সন্ত্রাসী বা অপশক্তি আগামী জাতীয় নির্বাচন বানচাল করার ক্ষমতা রাখে না। সকল পুলিশ ইউনিট গঠনমূলক ও অপরাধমুক্ত নির্বাচন নিশ্চিত করতে সম্পূর্ণ প্রস্তুত। এই বক্তব্য তিনি গতকাল শনিবার খুলনার বয়রা পুলিশ লাইনে একটি প্রেস ব্রিফিংয়ে ব্যক্ত করেন। এর আগে, তিনি খুলনা পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার (পিটিসি), আর্ম পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন), র্যাপিড রিজার্ভ ফোর্স (আরআরএফ) এবং খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশে (কেএমপি) চলমান পুলিশ সদস্যদের নির্বাচনকালিন প্রশিক্ষণ পরিদর্শন করেন।
আইজিপি বলেন, বিগত তিনটি নির্বাচনে পুলিশকে বিতর্কিত করে রাজনৈতিক বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা হয়েছে। পক্ষপাতিত্ব বা অন্যায়ের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে থাকবেন বলে তিনি উল্লেখ করেন, যাতে নিরপেক্ষতা বজায় থাকে। তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমান সরকার চায় একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন। এ কারণে পুলিশকে আরও বেশি প্রস্তুত করতে সরকারি উদ্যোগে নতুন প্রশিক্ষণ চালু হয়েছে।’
এটি প্রথমবারের মতো পুলিশ সদস্যদের দায়িত্ব পালনের জন্য স্বতন্ত্র ও বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, বিগত নির্বাচনের সময় পুলিশকে অপকর্মে ব্যবহার করা হয়েছে, ফলে এবার সেই ভুলত্রুটি থেকে শিক্ষা নিয়ে একটি সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করায় অঙ্গীকারবদ্ধ পুলিশ। তবে, যেসব পুলিশ সদস্য এখনও সংশোধন হতে পারেননি বা করতে চান না, তাদের মূল নেতৃত্বে দায়িত্ব দেওয়া হবে না। নির্বাচনে সংশয়হীনতা নিশ্চিত করতে রেঞ্জ ডিআইজি ও পুলিশ সুপারদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, যাতে ভবিষ্যত নির্বাচনে ফলপ্রসূ অবদান রাখতে পারেন।
আইজিপি অপরদিকে, জানান, আগামী জানুয়ারিতে দায়িত্বের বণ্টনের সময় বিষয়টি আরও বিস্তারিত দেখা হবে। নির্বাচনে পুলিশ সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, তবে সকলের সহযোগিতা ছাড়া শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। তিনি বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অর্থাৎ আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) ব্যবহার করে misinformation এবং ডিজি ইনফরমেশন ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা চলছে, যা নজরে আসছে। এ বিষয়েও সচেতন থাকতে হবে এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতার নামে অপ্রয়োজনে যেন হয়রানি বা কালো বাজারের অপপ্রয়োগ না হয়, সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে বলেছেন।
এক প্রশ্নে তিনি জানান, পুলিশে দায়ের হওয়া মামলার অগ্রগতি এখনো ততটা নয়, তবে ১৯টি হত্যা মামলায় ২১ জনকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়েছে এবং অন্যান্য মামলার ৩০-৩১ জন এখনও গ্রেফতার হয়নি। তিনি আরও বলেন, মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো ঠেকাতে ৫ আগস্টের পর তদন্তে সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যাতে হয়রানি না হয়। ইতোমধ্যে ডিএমপিকে দুই হাজারের বেশি ব্যক্তিকে মামলায় জড়ানো এড়ানোর জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রেস ব্রিফিংয়ে ছিলেন খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি রেজাউল হক, কেএমপি কমিশনার মো. জুলফিকার আলী হায়দারসহ বিভিন্ন পুলিশ কর্মকর্তারা।






