বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) দ্বাদশ আসর শুরু হতে আর মাত্র ছয় দিন বাকি। এই আসর ক্যালেন্ডারে নিখুঁতভাবে সাজানো হয়েছে, যেখানে ২৬ ডিসেম্বর সিলেট বিভাগীয় স্টেডিয়ামে স্বাগতিক সিলেট টাইটান্স এবং রাজশাহী ওয়ারিয়র্সের মধ্যকার ম্যাচ দিয়ে পর্দা উঠার কথা। এই টুর্নামেন্টের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে সবদিক, তবে বর্তমান পরিস্থিতির কারণে দেশের আইনশৃঙ্খলার অবস্থা নিয়ে বিসিবির মনোভাব ঝুঁকি ও শঙ্কায় ভুগছে।
শনিবার (২০ ডিসেম্বর) মিরপুর বিসিবি একাডেমি মাঠে প্রথম অনুশীলন চলে রাজশাহী ওয়ারিয়র্সের। অন্যদিকে, দেশের বেদনাদায়ক রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে বিসিবি এখন উদ্বেগে ভুগছে, যেখানে জুলাই মাসে ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই বিক্ষোভ, আন্দোলন এবং সংবাদপত্রে হামলার ঘটনায় নিরাপত্তার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ক্রিকেটের ভবিষ্যত অনিশ্চিত হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তত্ত্বাবধায়করা বলছেন, দেশের পরিস্থিতি বিবেচনা করে ইতোমধ্যে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়েছে। তবে, সব প্রস্তুতি সম্পন্ন—প্রথমত খেলোয়াড়রা অনুশীলন করছে, বিদেশি ক্রিকেটাররা চুক্তি করছে, পাকিস্তান থেকে টিভি প্রোডাকশন টিম ও ধারাভাষ্যকাররা আসার প্রস্তুতি চলছে। এই মুহূর্তে যদি কোনো অঘটন হয় বা টুর্নামেন্ট স্থগিত হয়, তাহলে আন্তর্জাতিকভাবে নেতিবাচক বার্তা যাবে এবং অর্থনৈতিক ক্ষতি হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
বিপিএলের গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য সচিব ইফতেখার রহমান মিঠু জানান, সরকারের পরামর্শে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান বাতিল হয়েছে। এছাড়াও, আরও কিছু সিদ্ধান্ত নিতে হলে সংশ্লিষ্ট সকলের মতামত নেওয়া হবে। তিনি বলেন, ‘খেলার জন্য কোনো সিদ্ধান্ত নিতে গেলে সব মহলের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।’
এদিকে, পরিস্থিতির আমূল পরিবর্তনের অপেক্ষায় থাকলেও বেশ কিছু দল ভেন্যুতে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। ২৬ ডিসেম্বর থেকে ২ জানুয়ারি পর্যন্ত সিলেটে খেলা অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে সিলেট যাচ্ছেন সিলেট টাইটান্সের খেলোয়াড়রা, যেখানে ২২ ডিসেম্বর থেকে তাদের অনুশীলন ও বিদেশি ক্রিকেটাররা যোগ দেবেন। এছাড়া, ২৩ ডিসেম্বর নোয়াখালী এক্সপ্রেস ও রাজশাহী ওয়ারিয়র্স সিলেটে পৌঁছাবে, আর চট্টগ্রাম রিয়েলস ২২ ডিসেম্বর সিলেটে পৌঁছানোর পরিকল্পনা রয়েছে। দিন দিন সংক্ষিপ্ত হয়ে আসছে পরিকল্পনা, সবার শেষে ২৭ ডিসেম্বর রংপুর রাইডার্স ঢাকায় একটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেই সিলেটের পথে রওনা দেবে।
বিসিবি কর্মকর্তারা বলেছেন, তারা পরিস্থিতি এখনো খুবই গুরুত্বের সঙ্গে নিচ্ছেন এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে টুর্নামেন্টের আনুষ্ঠানিকতা শুরু করবেন না। তবে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হওয়ায়, শেষ মুহূর্তেও তারা সম্ভবত খেলা চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে। পরিস্থিতি যেখানে দাঁড়িয়েছে, নিরাপত্তা আস্থা ফেরানোই এখন প্রধান চ্যালেঞ্জ।






