বগুড়ায় প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগে তৈরি হচ্ছে বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চল পুণ্ড্র ইকোনমিক জোন, যা দেশের উত্তরাঞ্চলের অর্থনীতি বদলে দিতে পারে। এই শিল্পাঞ্চলটি তৈরি করছে ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘ (টিএমএসএস) এবং তার অঙ্গপ্রতিষ্ঠান বিল্ডিং কনস্ট্রাকশন লিমিটেড (বিসিএল)। আশাকরা হচ্ছে, যদি এটি সরকারি অনুমোদন পায়, তবে এখানে আন্তর্জাতিক মানের গ্লাস, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, ভেষজ তেল, ফিডমিল এবং লাইট ইঞ্জিনিয়ারিংসহ বিভিন্ন ধরনের শিল্প-কারখানা গড়ে উঠবে।
প্রথমে ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের পাশে বগুড়ার গোকুল এলাকায় প্রায় ৪০০ বিঘা জমিতে এ শিল্পাঞ্চলের নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০২১ সালে। এখন আরও ১০০ বিঘা জমি কেনার কাজ চলমান, ফলে মোট জমির পরিমাণ দাঁড়াবে ৫০০ বিঘা।
প্রাইভেট পুণ্ড্র ইকোনমিক জোনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দেশের বড় কোম্পানি ও ব্যবসায়ী গ্রুপগুলো এখানে শিল্পকর্ম চালুর ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, এই অঞ্চলটিতে প্রাথমিকভাবে দুই হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্রয়োজন হবে। নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই পিএলসি (নেসকো) এর চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুতের সরবরাহ নিশ্চিতের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। তবে দ্রুত শিল্পায়নের জন্য গ্যাসের দরকার, এ বিষয়ে ইতিমধ্যেই আলোচনা চলছে।
উল্লেখ্য, এই অঞ্চলে প্রায় ১২শ’ কোটি টাকা বিনিয়োগে বিসিএল গ্লাস ইন্ডাস্ট্রিজ একটি কারখানা স্থাপন করেছে। গ্যাস সংযোগ পেলে উৎপাদন শুরু হবে, যেখানে বিভিন্ন ধরনের রঙিন ও আর্ন্তজাতিক মানসম্পন্ন গ্লাস তৈরি হবে। এতে অন্তত এক হাজার শ্রমিকের কর্মসংস্থান হবে বলে আশার কথা বলছেন কর্মকর্তাীরা।
শিল্পাঞ্চলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গ্যাসের প্রাথমিক চাহিদা নির্ধারিত হয়েছে দেড় লাখ কিউবিক মিটার। বিসিএল গ্লাসের কারখানাটি চালু হলে প্রয়োজন হবে পঞ্চাশ হাজার কিউবিক মিটার গ্যাস।
বগুড়ার শিল্প মালিক ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, পর্যাপ্ত শ্রম সুবিধা, নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস ও বিদ্যুৎ, স্বল্পমূল্যে শিল্প অবকাঠামো এবং উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা—বিশেষত সরাসরি সড়ক ও রেল সুবিধা এখানে থাকায় উদ্যোক্তাদের মধ্যে আগ্রহ বাড়ছে। এছাড়া, বিমানবন্দর নির্মাণের কাজও দ্রুত এগুচ্ছে। এসব সুবিধার কারণে ট্যানারি, রড সিমেন্ট ও মোটরবাইক ও গাড়ি তৈরির শিল্পখাতের জন্য এখানে কারখানা স্থাপন করতে চাচ্ছেন অনেক উদ্যোক্তা।
প্রস্তাবিত এই প্রকল্পের অনুমোদনের জন্য শিল্প মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছে। গত বছরের ৭ নভেম্বর মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি দল প্রস্তাবিত এলাকাটি পরিদর্শন করে। টিএমএসএস আশা করছে, খুব শিগগিরই সরকারি অনুমোদন পেয়ে যাবে।
বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সংস্থা (বিসিক) বগুড়ার এক কর্মকর্তা বলেন, megfelelő জমি পেলে এখনই এখানে দেড় হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ সম্ভব। সহজ শর্তে জমি ও অন্যান্য সুবিধা নিশ্চিত হলে, বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠবে এবং অনেক শ্রমিকের কর্মসংস্থান হবে।






