বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে ১৫০.৭৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার নতুন অর্থায়ন অনুমোদন দিয়েছে, যা দেশের স্বল্প আয়ের তরুণ ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য কর্মসংস্থান ও জীবিকার সুযোগ বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এই অর্থের মাধ্যমে বিশেষ করে নারীদের ক্ষমতায়ন, জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাস하는 জনগোষ্ঠী এবং প্রান্তিক অঞ্চলের যুবকদের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টির উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
প্রকল্পের আওতায়, দেশের বিভিন্ন স্থানে আরও প্রায় ১ লাখ ৭৬ হাজার যুবকের জন্য দক্ষতা উন্নয়ন, প্রশিক্ষণ, উদ্যোক্তা উন্নয়ন, অ্যাপ্রেন্টিসশিপ ও ক্ষুদ্রঋণের সুযোগ বৃদ্ধি পাবেন। এর আগে এই প্রকল্পের মাধ্যমে প্রায় ২ লাখ ৩৩ হাজার মানুষ উপকৃত হয়েছেন।
বিশ্বব্যাংকের এক প্রেস বিবৃতিতে জানানো হয়, অংশগ্রহণকারীরা একটি সমন্বিত সেবা প্যাকেজের অধীনে দক্ষতা উন্নয়ন, প্রশিক্ষণ ও ঋণের সুবিধা পাবেন, যা তাদের কর্মসংস্থান ও ব্যবসা সম্প্রসারণে সহায়ক হবে। এর পাশাপাশি নারীদের জন্য মানসম্মত শিশুধার্য (চাইল্ড কেয়ার) সেবা এবং জলবায়ু সহনশীল কার্যক্রম চালু করা হবে, যাতে তারা ঝুঁকি মোকাবিলার যোগ্যতা অর্জন করতে পারেন।
বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটান বিষয়ক ভারপ্রাপ্ত বিভাগীয় পরিচালক গেইল মার্টিন বলেন, ‘একটি ভালো চাকরি জীবনের মূল চাবিকাঠি, যা পরিবার ও সমাজের উন্নতি আনতে পারে। তবে বাংলাদেশে অনেক তরুণ এখনো কাজের সুযোগ পাচ্ছেন না, যেখানে দক্ষতা ও যোগ্যতার অভাব অনেক সমস্যার সৃষ্টি করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই অর্থায়ন দরিদ্র পরিবারের যুবকদের জন্য বাজারভিত্তিক দক্ষতা, সরবরাহ ও প্রশিক্ষণের সুযোগ তৈরি করবে, যার ফলে তারা ভালো কর্মসংস্থান ও জীবিকা অর্জনে সক্ষম হবে।’
এছাড়াও, এই প্রকল্পের মাধ্যমে গ্রামীণ এলাকার মধ্যে কার্যক্রম সম্প্রসারিত হবে, যেখানে প্রান্তিক যুবক ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা তাদের জন্য নির্ধারিত সহায়তা পেতে পারবেন। নারীদের জন্য মানসম্মত ও কম খরচের শিশুধার্য সেবার পাইলট প্রকল্প চালুর পরিকল্পনা থাকছে, যা নারীদের কাজে অংশগ্রহণ বাড়ানোর পাশাপাশি নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে।
সঙ্গে থাকছে জীবনদক্ষতা প্রশিক্ষণ, চাকরি মেলা ও নিয়োগের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও সংস্থাগুলোর সঙ্গে সংযোগের সুবিধা। বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র সামাজিক সুরক্ষা অর্থনীতিবিদ ও প্রকল্পের টিম লিডার আনিকা রহমান উল্লেখ করেন, ‘রেইজ প্রকল্প তরুণ ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জীবন পরিবর্তনে অবদান রাখছে।’
তিনি আশা প্রকাশ করেন, এই নতুন অর্থায়ন আরও কার্যকর উদ্যোগ বাস্তবায়ন, ক্ষুদ্রঋণের সুযোগ বাড়ানো এবং সৃজনশীল শিশু যত্নের মতো প্রকল্প চালুর মাধ্যমে আরও বেশি যুবক ও নারীর জন্য সুযোগ সৃষ্টি করবে।
প্রকল্পটি ইতিমধ্যে উল্লেখযোগ্য সাফল্য দেখিয়েছে, যেখানে প্রশিক্ষণ গ্রহণকারী শিক্ষানবিশদের ৮০ শতাংশ নি:সন্দেহে তিন মাসের মধ্যে কাজ পেয়েছেন। তরুণ ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা তাদের ব্যবসার উন্নতি এবং আয়ে বৃদ্ধি রিপোর্ট করেছেন।
২০২১ সালে শুরু হওয়া এই প্রকল্প করোনাকালেও ৫০ হাজারের বেশি ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা, ২ লাখ ৫০ হাজারের বেশি প্রবাসী ও ১২২ হাজারের বেশি উপকারভোগীকে আর্থিক ও প্রশিক্ষণ সহায়তা প্রদান করেছে, যার মধ্যে বর্তমান সময়ে ৫৫ শতাংশ নারী।
এই অতিরিক্ত অর্থায়নের ফলে বর্তমানের জন্য বিশ্বব্যাংকের মোট সহায়তার পরিমাণ দাঁড়াল ৩৫০.৭৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।






