বার্সেলোনার এক সময়ের অত্যন্ত প্রতিশ্রুতিশীল ফুটবলার রাফিনহা আলকান্তারা মাত্র ৩২ বছর বয়সেই পেশাদার ফুটবল থেকে বিদায় নিলেন। তার অসাধারণ কারিগরি দক্ষতা, নিখুঁত পাসিং ও টেকনিক্যাল মুন্সিয়ানার জন্য তিনি শুরু থেকেই বিশ্ব ফুটবলের নজর কেড়ে নিয়েছিলেন। তবে বারবার ইনজুরির কবলে পড়ায় তার ক্যারিয়ারে বড় ঝড় বয়ে যায়, যার ফলে অকালেই মাঠের লড়াই থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হন তিনি। গত ২২ ডিসেম্বর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁর অবসর ঘোষনা করেন। এর আগে ২০২৪ সালের গ্রীষ্মে কাতারের ক্লাব আল-আরাবি ছাড়ার পর প্রায় এক বছর তাঁর সাথে কোনও ক্লাবের সম্পর্ক ছিল না।
বার্সেলোনার বিখ্যাত ‘লা মাসিয়া’ একাডেমি থেকে উঠে আসা রাফিনহা একসময় ক্লাবের মধ্যমাঠের অন্যতম ভরসা হিসেবে বিবেচিত হতেন। his ক্যারিয়ারের সেরা সময় ছিল ২০১৪-১৫ মৌসুম, যখন লুইস এনরিকের অধীনে বার্সেলোনা লা লিগা, কোপা দেল রে এবং চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা জিতে ইতিহাস সৃষ্টি করেছিল। সেই শক্তিশালী স্কোয়াডের একজন নির্ভরযোগ্য সদস্য হিসেবে তিনি সব শিরোপা জয়ের গৌরব অর্জন করেন। তবে তার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় বাধা এসেছিল ২০১৭ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যবর্তী সময়টিতে। অ্যান্টিরিয়র ক্রুসিয়েট লিগামেন্ট (ACL) এবং মেনিস্কাসের গুরুতর চোটের কারণে তিনি প্রায় ৫০০ দিন মাঠের বাইরে থাকায়, তার গতি ও ফিটনেস স্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
ইনজুরির চোট কাটিয়ে ফেরার পর রাফিনহা ইন্টার মিলান ও সেল্টা ভিগো’র মতো ক্লাবে ধারে খেলে নিজেকে প্রমাণের চেষ্টা চালিয়েছিলেন। ২০২০ সালে তিনি স্থায়ী ভাবে বার্সেলোনা ছেড়ে ফরাসি জায়ান্ট প্যারিস সেন্ট-জার্মেইনে (পিএসজি) যোগ দেন, কিন্তু সেখানে বেশিদিন স্থায়ী হতে পারেননি। পরবর্তীতে রিয়াল সোসিয়াদাদ যোগ দেন, এবং ক্যারিয়ারের শেষ অধ্যায়ে কাতারের ক্লাব আল-আব্রিতে পাড়ি জমান। নিজের দীর্ঘ পেশাদার ক্যারিয়ারে রাফিনহা মোট ৩৮৬টি ম্যাচ খেলে ৫৫টি গোল ও ৪৬টি অ্যাসিস্ট করেছেন। তার ঝুলিতে রয়েছে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, তিনটি লা লিগা, তিনটি কোপা দেল রে, লিগ ওয়ান ও ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের মতো মর্যাদাপূর্ণ শিরোপা। তবে ইনজুরির কারণে তার পুরো প্রতিভার বিকাশ না হওয়ায় ফুটবলপ্রেমীদের মনে এক বিশাল আক্ষেপ থেকে গেছে।






