খেলাপি বেড়ে যাওয়ায় বড় অঙ্কের প্রভিশন (নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণ) ঘাটতিতে রয়েছে কয়েকটি ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান (এনবিএফআই)। বর্তমান পরিস্থিতিতে দ্রুত সময়ে খেলাপি ঋণ কমানোসহ নানা সমস্যা সমাধানে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা চেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে সাতটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও সিইওকে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, তাদের চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে খেলাপি ঋণ কমানোর সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা সাত দিনের মধ্যে দিতে বলা হয়েছে। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর কাজী ছাইদুর রহমান।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের মার্চ থেকে জুন পর্যন্ত তিন মাসে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ২ হাজার ৯৬ কোটি টাকা। ফলে জুনের শেষে মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৯ হাজার ৯৫১ কোটি টাকা, যা এই খাতে বিতরণ করা মোট ঋণের ২৭ দশমিক ৬৫ শতাংশ। গত মার্চ মাস শেষে এনবিএফআইয়ে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১৭ হাজার ৮৫৫ কোটি টাকা, যা ছিল ওই সময়ের মোট ঋণের ২৫ শতাংশ।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, যাদের প্রয়োজনীয় প্রভিশন ও মূলধন সংরক্ষণে সমস্যা হচ্ছে, তাদের আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে সমস্যার সমাধান করতে বলা হয়েছে। তারা কীভাবে দ্রুত সময়ে খেলাপি ঋণ কমাবে ও মূলধন সংরক্ষণ করবে তার একটি সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা চাওয়া হয়েছে। আগামী সাত দিনের মধ্যে এ পরিকল্পনা জমা দিতে বলা হয়েছে। বৈঠকে সাতটি প্রতিষ্ঠানকে নিজ নিজ কোম্পানির মূলধন সংরক্ষণ পরিকল্পনা জমা দিতে বলা হয়েছে। শিগগিরই অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে এই নির্দেশনার আওতায় নিয়ে আসা হবে। এর আগে গত ২৭ আগস্ট আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর এমডিদের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক সভায় জানানো হয়, দেশের ৩৫টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৫টিতে খেলাপি ঋণ ৩২ শতাংশের বেশি। এ পরিস্থিতিতে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বাংলাদেশ ব্যাংক আমানতকারীদের অর্থ ফেরত দেওয়াকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়ার নির্দেশ দেয়।