বাংলাদেশে বাণিজ্য, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেছেন, দ্রুত পরিবর্তনশীল আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের রপ্তানি বৃদ্ধিকে টেকসই ও সক্ষম করার জন্য পণ্য বৈচিত্র্যকরণ, সরবরাহ চেইন সুদৃঢ় করা এবং নতুন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক গড়ে তোলা অত্যন্ত জরুরি। তিনি এই কথাগুলো বলেন সোমবার পূর্বাচলের বাংলাদেশ চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত ‘গ্লোবাল সোর্সিং এক্সপো ২০২৫ ঢাকা’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভাষণে।
উপদেষ্টা আরও বললেন, এই ইভেন্ট দেশ-বিদেশের বিশেষজ্ঞ, নির্মাতা, নীতিনির্ধারক, বিনিয়োগকারী ও উদ্ভাবকদের জন্য নতুন ধারণা share করার, গভীর আলোচনা ও সহযোগিতা স্থাপন এবং দীর্ঘমেয়াদি ব্যবসায়িক অংশীদারিত্বের জন্য একটি মূল্যবান প্ল্যাটফর্ম হয়ে উঠবে। তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ শীঘ্রই স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উন্নত দেশে উত্তরণের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। এই অগ্রগতি যেমন গর্বের বিষয়, তেমনই কিছু নতুন চ্যালেঞ্জও সামনে এসেছে। বর্তমান সুবিধা ও ছাড় সুবিধা ধীরে ধীরে কমতে থাকায়, আমাদের দ্রুত পণ্য ও রপ্তানি বাজারের বৈচিত্র্যকরণ, প্রতিযোগিতামূলকতা বৃদ্ধি এবং প্রগতিশীল বাণিজ্য নীতিমালা অনুসরণে অগ্রসর হতে হবে। এই সকল উদ্যোগ আমাদের ভবিষ্যতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, এবং এই গ্লোবাল সোর্সিং এক্সপো সেই লক্ষ্য অর্জনে সহায়ক হবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিকবিষয়ক বিশেষ দূত ড. লুতফে সিদ্দিকী, এক্সপোর্ট প্রমোশন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হাসান আরিফ, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবুর রহমান, এফবিসিসিআইর প্রশাসক মো. আব্দুর রহিম খান এবং বিকেএমইর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানটি সভাপতিত্ব করেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব।
বিশ্ব বাজারে বাংলাদেশের রপ্তানি সম্ভাবনা উন্মোচনে দেশের প্রথমবারের মতো সরকারি উদ্যোগে এই বৃহৎ প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এটি চলাকালীন সময়ে ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এই ইভেন্টের আয়োজন করে।
এখানে বাংলাদেশের আটটি প্রধান রপ্তানি খাতের পণ্য প্রদর্শিত হচ্ছে, যেগুলো হলো তৈরি পোশাক, চামড়া ও প্রক্রিয়াজাত পণ্য, পাট ও পাটজাত পণ্য, কৃষিজাত দ্রব্য, প্লাস্টিক ও কিচেনওয়্যার, হোম ডেকর ও ফার্নিচার, ওষুধ এবং তথ্যপ্রযুক্তি (আইসিটি)। এই এক্সপোতে অংশ নিচ্ছেন শতাধিক প্রতিষ্ঠান, বহুজাতিক কোম্পানি, পাইকারি ব্যবসায়ী ও সরবরাহের প্রতিনিধিরা।
আফগানিস্তান, চীন, ইরান, জাপান, মিয়ানমার, পাকিস্তান, সিঙ্গাপুর, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেতা, বিনিয়োগকারী এবং সোর্সিং প্রতিষ্ঠানরা এই উৎসবে অংশগ্রহণ করে থাকবেন। তারা পণ্য ও সেবা নিয়ে বৈঠক, ক্রয়-বিক্রয় এবং চুক্তি করতে পারবেন। তিন দিনব্যাপী এই এক্সপোতে থাকবে বিষয়ের ভিত্তিতে ১০টি বিশেষ সেমিনার, অনলাইন ও অফলাইন বিজনেস-টু-বিজনেস (B2B) বৈঠক, দেড় শতাধিক স্টল, নেটওয়ার্কিং সেশন এবং একটি ফ্যাশন শো। এই আয়োজন বাংলাদেশি বিনিয়োগ ও রপ্তানি ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত উন্মোচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।






