কারান্তরীণ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আইনজীবী হিসেবে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করা লর্ড কার্লাইলকে এবার ভারতেও ঢুকতে দেওয়া হয়নি। গত বুধবার রাতে বিমানযোগে দিল্লি পৌঁছলে সেখান থেকেই ফিরতি বিমানে তাকে দেশে পাঠিয়ে দেয় ভারত সরকার। কার্লাইলকে ঢুকতে না দেওয়ার ভারত সরকারের সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। দলটির দায়িত্বশীল নেতাদের ভাষ্য, একটি দেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করে আরেক দেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের সুযোগ কেউ পেতে পারে না। এ কারণেই ভারতে তাকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।
আওয়ামী লীগের নেতারা জানান, কার্লাইল বাংলাদেশেও প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে প্রবেশ করতে চেয়েছেন বলে অনুমতি পাননি। একই কায়দায় তিনি ভারতে প্রবেশ করতে চেয়ে ব্যর্থ হয়েছেন।
আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, কার্লাইলের ভারত সফর ঠেকানোর পুরো প্রক্রিয়া দেখভাল করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পর্যায়ে যোগাযোগ করে কূটনৈতিক সফলতা পেয়েছে ক্ষমতাসীনরা।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্রকে উদ্ধৃত করে আওয়ামী লীগ নেতারা জানান, লর্ড কার্লাইল প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশে ব্যর্থ হয়ে একই কায়দা অনুসরণ করে ভারতে প্রবেশ করতে চাইছে—এ বিষয়টি ভারত সরকারকে জানানো হয়। এ কূটনৈতিক তৎপরতায় ভারত তাকে দিল্লি বিমানবন্দর থেকেই ফেরত পাঠায়।
‘পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভারত সরকারকে জানায়, বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সদস্য না হলে বা সনদপ্রাপ্ত না হলে দেশের বাইরের কোনও আইনজীবী এদেশে এসে কারও পক্ষে আইনি সহায়তা দেওয়ার আইনগত অধিকার রাখেন না। এ কারণে কার্লাইলকে বাংলাদেশে আসার অনুমতি দেওয়া হয়নি। বাংলাদেশে আসতে ব্যর্থ হওয়ায় আরেক দফা প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে লর্ড কার্লাইল ভারতে প্রবেশ করতে চায়- এটা জানানো হয় ভারতকে। ভারত সরকার বিষয়টি বুঝতে পেরে দিল্লি বিমানবন্দর থেকে কার্লাইলকে ফেরত পাঠায়’—জানান ক্ষমতাসীন দলের কয়েকজন দায়িত্বশীল নেতা।
আওয়ামী লীগ নেতারা জানান, কার্লাইল টুরিস্ট ভিসায় ভারত এসেছিলেন। এই ভিসায় কোনও দেশে প্রবেশ করে সংবাদ সম্মেলন করার এখতিয়ার কারও নেই। কার্লাইলের ভারত সফরে প্রতারণা রয়েছে মনে করে আওয়ামী লীগ। এটি তারা (ভারত সরকার) বুঝতে পেরেছে বলেই ফিরতি ফ্লাইটেই কার্লাইলকে ভারত ত্যাগ করতে বলা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, লর্ড কার্লাইল যে ইনটেনশন নিয়ে ভারতে প্রবেশ করার চেষ্টা করেছেন সেটা নিয়মবহির্ভূত ছিল। ফলে তাকে দিল্লি বিমানবন্দর থেকে ফেরত পাঠিয়েছে। তিনি বলেন, এজন্যে ভারত সরকারকে সাধুবাদ জানাই আমরা।
দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান বলেন, লর্ড কার্লাইলকে ভারত সরকার ফেরত পাঠিয়ে দেওয়ায় আওয়ামী লীগ দেশটির সরকারকে সাধুবাদ জানায়।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, লর্ড কার্লাইলের উদ্দেশ্য ছিল ষড়যন্ত্র। ভারত সরকার তা বুঝতে সমর্থ হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা যেমন আমাদের ভূখণ্ড ব্যবহার করে কাউকে ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করতে দেই না, তেমনি ভারতও তাদের ভূখণ্ড ব্যবহার করে ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করতে দেয়নি কার্লাইলকে।