বাংলাদেশে সফররত ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগে ঢাকা পৌঁছানোর পর শনিবার সকালে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাকে লাল গালিচা সংবর্ধনা দেওয়া হয়। সেখানে তাকে স্বাগত জানান বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। এরপর বিকেলে ঢাকার একটি হোটেলে বাংলাদেশের বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন ও ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগের মধ্যেকার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এই বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির বিভিন্ন দিক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগে বাংলাদেশের সঙ্গে ভুটানের সম্পর্ক খুবই বন্ধুত্বপূর্ণ বলে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, এই সম্পর্ক আরও গভীর করে তুলতে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি একান্ত প্রয়োজন। ভুটান প্রথম ও একমাত্র দেশ হিসেবে বাংলাদেশের সঙ্গে এই চুক্তির কথা বিবেচনা করছে। তিনি বিশেষ করে কুড়িগ্রামে বাংলাদেশের বরাদ্দকৃত বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল থেকে বাণিজ্য ও নির্মাণ উপকরণ আমদানির আগ্রহ প্রকাশ করেন। এরূপে নানাভাবে দুদেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
তিনি আরও জানিয়ে থাকেন, ভুটানের সরকার বায়োডাইভারসিটি নগর গোলেেফু নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে, যেখানে প্রাকৃতিক জীববৈচিত্র্য রক্ষা ও টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করা হবে। এই নগর নির্মাণে বাংলাদেশের নির্মাণ উপকরণ দরকার হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। পাশাপাশি, বাংলাদেশ থেকে ওষুধ, সিরামিক, তৈরি পোশাক ও ইলেকট্রনিক সামগ্রী আমদানির আগ্রহও ব্যক্ত করেন।
দর্শনার্থীদের জন্য তিনি বাংলাদেশের পর্যটকদের ভুটানের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগের আহ্বান জানান। তিনি উল্লেখ করেন, ভুটানে দক্ষিণ এশিয়ার পর্যটকদের জন্য যা কেবল পনের ডলার, সেখানে অন্য দেশের জন্য এটি শত ডলারের মতো। বাংলাদেশের পর্যটকদের জন্য এই দারুণ সুযোগ কাজে লাগানোর জন্য সরকারের পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান তিনি।
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর প্রথম ভুটানকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বৃদ্ধি দিয়ে সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করা সম্ভব। এছাড়াও, আসন্ন বাংলাদেশ-ভুটান সচিব পর্যায়ের বৈঠকে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির বিষয়টিও গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হবে। তিনি ব্যবসায়ীদের মধ্যে আরও বেশি বাণিজ্য ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের ওপর গুরুত্ব দেন।
বৈঠকে বাংলাদেশে বর্তমানে বিশ্বমানের ঔষধ, সিরামিক, তৈরি পোশাক ও নির্মাণ উপকরণ তৈরি হচ্ছে। এই পণ্যগুলোর আমদানির মাধ্যমে বাণিজ্য আরও বিস্তৃত করার জন্য ভুটানের সরকারের প্রতি তিনি আহ্বান জানান। এই আলোচনা ও বৈঠকে ভুটানের ফরেন অ্যাফেয়ার্স ও এক্সটার্নাল ট্রেড মিনিস্টার ডি এন ধুনগায়েল, ইন্ডাস্ট্রি, কমার্স অ্যান্ড এমপ্লয়মেন্ট মিনিস্টার লায়েন পো নামগায়েল দর্জি এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।






